রুল খারিজ: ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার দরজা খুলল না

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ বন্ধের সিদ্ধান্ত হাই কোর্টে টিকে গেছে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2015, 05:24 AM
Updated : 8 July 2015, 07:19 AM

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ বুধবার এক রায়ে এ বিষয়ে আগে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছে। 

এর ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ হচ্ছে না বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী এ এফ এম মেসবাহ উদ্দিন জানিয়েছেন।

অর্থাৎ, চলতি বছর যারা এইচএসসি পাস করবে, কেবল তারাই ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তির জন্য পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে। এ বছর পাস করা কোনো শিক্ষার্থী আর আগামী বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না।

মেসবাহ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ২০০৯ সাল থেকে দেখে আসছি, দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ দেওয়ার কারণে অনেক আসন শূণ্য থাকে। এটি জাতীয় ক্ষতি। হাই কোর্ট রুল খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।”

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না, আবেদনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে তা ঠিক করা হবে।

রিট আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রুল খারিজের পর তাদের কাউকে কাউকে হতাশা ও কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।

এইচএসসি উত্তীর্ণরা এতোদিন টানা দুইবার ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেলেও গতবছর তা সীমিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি ঠেকাতেই কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গতবছর ১৪ অক্টোবর ওই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় শুধু ওই বছর এইচএসসিতে উত্তীর্ণরাই অংশ নিতে পারবে; পুরনোরা নয়।

ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা সে সময় টানা কয়েক দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও অনশনের মতো কর্মসূচি পালন করেন।  এরপর হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন দ্বিতীয়বার ভর্তিচ্ছু ২৬ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবক।

তাদের আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গত ১৬ মার্চ হাই কোর্ট রুল দেয়। দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ বাতিল কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেইসঙ্গে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে আগের মত ভর্তির সুযোগ রেখে নতুন করে সিদ্ধান্ত কেন দেওয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়।   

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, পরীক্ষা কমিটির সম্পাদক, সহকারী রেজিস্ট্রার (একাডেমিক-২), ইউজিসি চেয়ারম্যান ও শিক্ষা সচিবকে এর জবাব দিতে বলা হয়।

বিবাদীদের জবাব পাওয়ার পর সোমবার ও মঙ্গলবার এ রুলের ওপর আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী ও মেসবাহ উদ্দিন। শুনানি শেষে বুধবার আদালত রায় ঘোষণা করে।

দেশে উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় হাজার ৫৮২ আসনের বিপরীতে গতবছর পরীক্ষা দেন তিন লাখ এক হাজার ১৩৮ জন পরীক্ষার্থী।