শনিবার সকাল ১০টায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের পাশের অস্থায়ী একটি ভবনে প্রথম ব্যাচ ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের ক্লাস শুরু হয়। ভর্তি হওয়া ৫১ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম দিনের ক্লাসে ৪৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এ পর্যন্ত মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষসহ তিনজন শিক্ষক যোগদান করেছেন।
সকালে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর উপলক্ষে পরিচিতি অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোস্তফা জামান, জেলা সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ ও কলেজের অধ্যক্ষ ডা. টিপু সুলতান।
এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিত্ত রঞ্জন পাল, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নুয়েন খীসা।
রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজের বিরোধীতাকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি না দিলেও কলেজের আশপাশে পুলিশ ও বিজিবি কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
কলেজের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম, স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, সীমা চাকমা, প্রহর চাকমা ও নাজমুন নাহার জানান, দীর্ঘ আড়াই মাস পর ক্লাস শুরু হওয়ায় অন্য মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের চেয়ে তারা পিছিয়ে পড়েছেন। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছে তারা।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. টিপু সুলতান বলেন, “আজ শনিবার থেকে মেডিকেল কলেজের ক্লাসসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করেছি। সবকিছুই সুন্দরভাবে শুরু হয়েছে। আশা করছি, আর কোনো সমস্যা হবে না “
তিনি জানান, প্রথম দিনে ৫১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪৪ জন উপস্থিত ছিল। বাকী ৭ শিক্ষার্থীও দুএকদিনের মধ্যে ক্লাসে যোগ দেবে। বাকী শিক্ষকের নিয়োগও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, এখন থেকে কলেজে নিয়মিত পাঠদান চলবে। মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুসারে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে।
গত ১০ জানুয়ারি টেলি কনফারেন্সের মাধ্যেমে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিসহ আদিবাসী কয়েকটি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ স্থাপনসহ যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিতের দাবি জানিয়ে বিরোধিতা করে আসছে।
উদ্বোধনী দিনেও পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলায় অবরোধের ডাক দিলে শহরে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ১৪৪ জারি করে প্রশাসন এবং পরে কারফিউ জারি হয়। এর পর থেকে মেডিকেল কলেজের সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল।