ঢাবি শিক্ষক চাকরিচ্যুত, বহিষ্কার শতাধিক ছাত্র

পিএইচডি থিসিসে (অভিসন্দর্ভ) জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নূর উদ্দিন আলোকে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2014, 07:24 PM
Updated : 25 May 2014, 09:15 PM

এছাড়া পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের ১০২ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গবেষণা কর্মে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও ভুল তথ্য দেয়ায় এর আগে সিন্ডিকেটের সভায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নূর উদ্দিনের পিএইডি ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছিল। রোববারের সভায় একই অপরাধে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

“এছাড়া পরীক্ষায় জালিয়াতি ও অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ১০২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয় সিন্ডিকেটের বৈঠকে।”

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিন্ডিকেট সভায় মোট ১০২ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস থেকে শুরু করে স্থায়ী বহিষ্কার পর্যন্ত রয়েছে।”

২০১০ সালে ‘দি প্র্যাকটিসেস অব মার্ক্সসিজম অ্যান্ড দেয়ার ইমপ্যাক্ট অন মডার্ন ওয়ার্ল্ড : দ্য কেস অব অবজেকটিভাইজেশন’ শীর্ষক গবেষণার জন্য নূর উদ্দিনকে পিএইচডি ডিগ্রি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। তার গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন।

আর মূল্যায়ন কমিটিতে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মকসুদুর রহমান।

২০১২ সালের ১ জুন উপাচার্যের কাছে নূর উদ্দিনের পিএইচডি গবেষণাটি পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগেরই শিক্ষক এমরান হুসাইন, দীল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, ফরিদ উদ্দীন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও সাব্বির আহমেদ।

শিক্ষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নাসরিন আহামদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ।

তদন্তে গবেষণায় মনগড়া তথ্য সংযোজনের প্রমাণ পাওয়ায় নূর উদ্দিনের পিএইচডি প্রত্যাহারের সুপারিশ করে কমিটি।

সুপারিশে বলা হয়, নূর উদ্দিন যে ‘মেথোডলজি’ ব্যবহার করে গবেষণাটি করেছেন, তা বাস্তবে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গবেষণার জন্য প্রায় ১৩ লাখের মতো মানুষের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন বলে দাবি করলেও নূর উদ্দিন তা উপস্থাপন করতে পারেনি।

এরপর গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় নূর উদ্দিনের পিএইচডি ডিগ্রি প্রত্যাহার করা হয়।