নিখোঁজ মিলনের সন্ধান চেয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন জগন্নাথে

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ৫৫ দিন পরও এক ছাত্রের খোঁজ দিতে না পারার প্রতিবাদে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2017, 08:05 AM
Updated : 17 July 2017, 08:05 AM

সোমবার সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক আটকে আন্দোলনও শুরু করেছে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাদেকুল ইসলাম মিলনের কোনো খোঁজ না মেলার পর তার সন্ধান দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে আসা শিক্ষার্থীরা গত ১৩ জুলাই তার সন্ধান দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়।

নিখোঁজ মিলনের খোঁজ চেয়ে গত ১৩ জুলাই মানববন্ধনও করে শিক্ষার্থীরা

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার অভিযোগ দেওয়া হলেও তাকে খুঁজতে ‘দৃশ্যমান’ কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

সর্বশেষ ১৩ জুলাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের এক মানববন্ধন থেকে মিলনকে উদ্ধারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশকে ৭২ ঘণ্টার ওই আল্টিমেটামের পরও মিলনের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় আন্দোলনে গেল শিক্ষার্থীরা।

সকালে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সামনে থেকে ব্যানার, প্লাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে র‍্যালি শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। র‍্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধান ফটকে এসে মিছিলে রুপ নেয়। এরপর ফটক আটকে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয় তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রাফি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা মিলনের খোঁজ চাই। বার বার বলার পরও পুলিশ প্রশাসন আমদের কোনো তথ্য দিতে পারে নাই।”

গত ২৩ মে ভোররাতে মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকা থেকে আ্ইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে কয়েকজন মিলনকে তুলে নিয়ে যায়। আটকের খবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অস্বীকার করলে পরদিন মিলনের পরিবার আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।

তার সহপাঠীরা ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদকে জানালে তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের জানান, মিলন ডিবি হেফাজতে আছে। এতে শিক্ষার্থীরা নিশ্চিন্ত হন।

কিন্তু ডিবি কার্যালয়ে মিলনের মা-বাবা ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গেলে মিলন তাদের হেফাজতে নেই বলে সেখান থেকে বলা হয়।

পরে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নূরে আলম আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলেন, “আগের তথ্যটি ভুল ছিল। পুলিশ স্বীকার করছে না যে তাদের হেফাজতে মিলন আছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোস্থফা কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের নিখোঁজ সহপাঠী মিলনের উদ্ধার দাবিতে কর্মসূচি দিয়েছে। ব্যানার পোস্টার নিয়ে তারা ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে চাইলে আমরা বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।

“প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিলনের জন্য কী পদক্ষেপ নিয়েছি, তা বলছি। আমরা তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছি।”