ঢাবির ৬৬৪ কোটি টাকার বাজেট সিনেটে পাশ

২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পাশ করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2017, 12:54 PM
Updated : 17 June 2017, 12:54 PM

শনিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ২০১৭ সালের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এ বাজেট অনুমোদন দেন সিনেট প্রতিনিধিরা।

বেলা ১১টার দিকে অধিবেশনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক  অভিভাষণ দেন।

অভিভাষণের পর বেলা ১টার দিকে অধিবেশনে এ বাজেট উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দীন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও সাধারণ কার্যক্রম পরিচালনার আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ব্যয়ের হিসাব এ বাজেট।

.

এবারের ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বাজেট অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে তিন কোটি আট লাখ টাকা কম। গত অর্থবছরে ৬৬৪ কোটি ১১ লাখ টাকার দেওয়া বাজেট দেওয়া হলেও সংশোধিত বাজেটে পরিমাণ বেড়ে হয় ৬৬৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বরাদ্দ ১৪ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২ শতাংশ। বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪১৬ কোটি ৬ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। আর পেনশনের জন্য আলাদাভাবে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১০৬ কোটি টাকা।

সে হিসেবে বেতন, ভাতা ও পেনশন দিতেই খরচ হবে মোট বাজেটের ৭৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

প্রতিবারে ন্যায় এবারও এই অর্থ বছরের বাজেটের আয়ের উৎস বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুদান ও নিজস্ব আয় হলেও ঘাটতি বাজেট থাকে ১১ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

এবার বাজেটে ইউজিসি দেবে ৬০৮ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা বাজেটের ৯১ দশমিক ৮৩ শতাংশ; আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় থেকে আসবে ৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, যা বাজেটের ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস হিসেবে ছাত্রদের কাছ থেকে আদায় করা ফিস থেকে ১৭ কোটি ৬০ লাখ, দালানকোঠা ও ভূমিসম্পত্তি থেকে ৮ কোটি এবং বিবিধ উৎস থেকে ১৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা আয় হয়।

অধিবেশনের অধিবেশনে অভিভাষণ দেন সভার সভাপতি ও উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বকীয়তা ও গুরুত্বের সঙ্গে অন্য কোনো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের তুলনা চলে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা একান্তভাবেই বিশোষায়িত ও উচ্চতর শিক্ষা। দেশের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিই উচ্চশিক্ষার মূল লক্ষ্য।

“কিন্তু এ কালে সেই বোধ ও অবস্থান থেকে আমরা সরে এসেছি। এখন আমাদের প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের মানসিকতা পরিবর্তন ঘটানো, যেন তারা যেকোনো সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়ে উঠে।”

বাজেট উপস্থাপনের সময় লিখিত বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দীন বলেন, “বাজেট শুধু কতিপয় আর্থিক প্রস্তাব কিংবা সংখ্যাতাত্ত্বিক বিবৃতির সমষ্টি নয়। এটি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে এবং সম্পদ বন্টনের একটি যুক্তি নির্ভর বাস্তব পরিকল্পনা।

“একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন অর্থের। সেই অর্থেও জোগান কোথা থেকে পাওয়া যাবে এবং কিভাবে তার সদ্ব্যবহার হবে- বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমে তা নির্ধারণ করার চেষ্টা করা হয়।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সন্ধ্যাকালীন কোর্সে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল ও অর্থ লাভের আকাঙ্ক্ষায় নিম্নমানের অসংখ্য গ্রাজুয়েট তৈরি করছে মন্তব্য করেন তিনি।

সন্ধ্যাকালীন কোর্সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত ছাত্রদেরকে চাকরির বাজারে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বলেও শঙ্ক প্রকাশ করেন অধ্যাপক কামাল।

সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. এনামুজ্জামান বক্তব্য দেন।