শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) প্রাঙ্গণে এ মিলনমেলার আয়োজন করে অ্যাকাউন্টিং অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন; পরিবার-পরিজন নিয়ে সাবেকদের অংশগ্রহণে যেটা ছড়ায় নানান রংয়ের আবেশ।
তাইতো অ্যালামনাইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশীদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলতে পারেন, “আমরা যে ক্যাম্পাসে বেড়ে উঠেছি, সেখানে আমরা আবার জড়ো হয়েছি নতুনভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে। আজতো আমাদের নতুন রংয়ে রাঙানোর দিন।”
১৯৮৫-৮৬ সালে একই ব্যাচে পড়তেন রফিকুল ইসলাম ও রফিকউদ্দিন, নামের এই মিল নিয়ে তাদের হলের সংযুক্তিও পড়ে সূর্যসেনে। পেশার ক্ষেত্রে মিল নিয়ে রফিকুল ইসলাম শিক্ষকতা করেন পিলখানার মুন্সী আবদুর রউফ পাবলিক কলেজে আর খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে পড়ান রফিকউদ্দিন।
রফিকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একই বিভাগে পড়তাম, একই হলে থাকতাম। এখন আবার এখন এখানে এসে একসাথে। প্রতিবছর এমন পুনর্মিলনী আমাদের মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়।”
তিনি বলেন, “আমরাতো পুনর্মিলনীতে আসার জন্য বন্ধুরা একটা মিটিংও করেছি। আমাদের ব্যাচের ৬০ শতাংশ সাবেক অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। তাদের অধিকাংশই এসেছে আজকে।”
সেখানে সম্মাননা দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত ১০ জন সাবেক শিক্ষার্থীকে।
উদ্বোধন করে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের এ সময়ে বড় সঙ্কট মানব সম্পর্কের ক্ষেত্রে। মানুষের মধ্যে সম্পর্ক না থাকার কারণে আমাদের শিক্ষা সেভাবে কাজে লাগছে না।
“দেখা যাচ্ছে, ব্যক্তিগত পরিচয় নাই, কোনো পূর্বশত্রুতা নাই- তবুও হত্যা করা হচ্ছে। এ কারণে সর্বাগ্রে দরকার মানব সম্পর্কে উন্নয়ন।”
সেই সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য এই পুনর্মিলনী ভূমিকা রাখবে মন্তব্য করে উপাচার্য বলেন, “যে সময় নিজেরা পার করেছেন সেটা ভাগাভাগির জন্য এ আয়োজন। নিজেদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য এ আয়োজন। নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি না করলে অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করব কীভাবে।”
অনুষ্ঠানে সম্মাননা পাওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বক্তব্য দিতে গিয়ে কমার্স বিভাগ থেকে কমার্স ফ্যাকাল্টি করার ক্ষেত্রে ১৯৭২ সালের আন্দোলন প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “৪২ বছর অস্ট্রেলিয়ায় থাকার পর বাংলাদেশে এসে আমি এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। আজ মনে হচ্ছে নিজের বাড়িতে এসেছি। আমি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে আছি, সেটাকে যদি ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে পারি সেটাই হবে আমার দেশের জন্য কিছু করা।”
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাকাউন্টিং অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি একেএম কামরুল ইসলাম জানান, সংগঠনের ১৭০০ সদস্যের মধ্যে একটি বড় অংশ পরিবার-পরিজন নিয়ে এ পুনর্মিলনীতে অংশ নিচ্ছেন।
মধ্যাহ্নভোজনের পর বিকেলে চলে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে, সন্ধ্যার আয়োজনে রয়েছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
পুনর্নিমলনী ঘিরে টিএসসি প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সেখানে রয়েছে বড় বিলবোর্ডে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ প্রাঙ্গণ পেছনে রেখে কিংবা ফেইসবুক প্রোফাইলের আকারে তৈরি বোর্ডে ছবি তোলার সুযোগ।