‘বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া’ নেতৃত্বের অপেক্ষায় জগন্নাথ ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রার এক দশক পর জগন্নাথে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের আসার ইঙ্গিত মিলছে।

কাজী নাফিয়া রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2016, 04:09 AM
Updated : 30 May 2016, 04:09 AM

এর আগে এ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে ছিল ‘জগন্নাথ কলেজে’ ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের আধিপত্য।

ঢাকার এই বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটি ‘খুব শিগগিরই’ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুব শিগগিরই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটি দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হবে।

“গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যাদের বয়স ২৯ বছরের কম, যারা নিয়মিত ছাত্র ও অবিবাহিত তাদেরকেই বাছাই করা হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে এবং সেটি প্রমাণিত; তারা কমিটিতে স্থান পাবে না।”

জগন্নাথ ছাত্রলীগের বর্তমান মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সহ-সভাপতিদের অধিকাংশই আগের ‘জগন্নাথ কলেজে’ ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী।

একই অবস্থা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলেরও। তাদের নতুন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতিদের কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নন।

ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ বলেন, বয়সের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের নতুন কমিটি সংগঠনের ‘গঠনতন্ত্র মেনেই’ নির্বাচন করা হবে।

‘কলেজ না বিশ্ববিদ্যালয়ের’ শিক্ষার্থীরা নেতৃত্বে থাকবেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্বে আসবে।”

তবে সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে আভাস মিলেছে, সভাপতি পদ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে নিশ্চিতভাবেই প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কোনো শিক্ষার্থী আসছেন।

নতুন কমিটির শীর্ষ পদ পেতে অনেকেই দৌঁড়ঝাপ করলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছয়জন এগিয়ে রয়েছেন বলে নেতা-কর্মীরা বলছেন।

এরা হলেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান জুয়েল, তানভীর রহমান খান, জহির রায়হান আগুন, সমাজসেবা সম্পাদক সাইফুল্লাহ ইবনে সুমন ও প্রচার সম্পাদক আনিসুর রহমান শিশির।

এর আগে ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর শরিফুল ইসলামকে সভাপতি ও সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে জগন্নাথ ছাত্রলীগের ২ সদস্যবিশিষ্ট এক বছর মেয়াদী কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

কমিটি ঘোষণার দুই মাস পর ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ব্যাপক সমালোচনায় পড়ে ছাত্রলীগ।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ধরপাকড়ের মধ্যে ছাত্রলীগের অনেক সক্রিয় কর্মীও আত্মগোপনে চলে যান। এরপর আর গুছিয়ে উঠতে পারেনি জগন্নাথ ছাত্রলীগ।

তারপর পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করায় ২০১৩ সালের ১৯ এপ্রিল দুই সদস্যের ওই কমিটিও স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

শিক্ষকের মাথায় অস্ত্র ঠেকানো, চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ ছিল ওই কমিটির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে।

ওই বছরের ১৮ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ জগন্নাথ শাখার ১২১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়, সেটিই এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটি।