১২ ঘণ্টা গ্রন্থাগার খোলা রাখার দাবিতে জবি ছাত্রফ্রন্টের বিক্ষোভ

সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খোলা রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2016, 01:00 PM
Updated : 18 May 2016, 01:00 PM

বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য চত্বরে সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রুটের বাসের ট্রিপ দ্বিগুণ করার দাবিও তোলা হয়।

সমাবেশে ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মেহরাব আজাদ বলেন, “দেশ নাকি উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, কিন্তু উন্নয়নের এই ভরা মৌসুমেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হল, পরিবহন, লাইব্রেরি, ক্যান্টিন সংকট দূর করতে ব্যর্থ হয়েছে। জগন্নাথের শতকরা ১০ ভাগ শিক্ষার্থীও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। সামান্য কয়টি বই ও সীমিত জায়গা নিয়ে চলছে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি।”

তিনি বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধ হলেই লাইব্রেরির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ক্লাস পরীক্ষাসহ একাডেমিক কাজ শেষ করে লাইব্রেরি ব্যবহারের সুবিধা পান না শিক্ষার্থীরা।

“এর মধ্যেও শিক্ষার্থীরা সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লাইব্রেরি চালু রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করছে না বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ এখানেই নাইট কোর্সের নামে চলে রমরমা ব্যবসা।”

কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একাংশ ব্যবহার করে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্লাসরুম তৈরির চেষ্টার দিকে ইঙ্গিত করে মেহরাব বলেন, “ক্লাসরুম সংকটের নামে লাইব্রেরি সংকোচন শিক্ষার্থীরা মানবে না।”

মঙ্গলবার রাজধানীর তেঁজগাঁওয়ের নাখালপাড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওবায়দুল্লাহ মারা গেছেন। এ নিয়ে দুই বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার সরকার বলেন, “আবাসন ও পরিবহন সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের যেখানে সেখানে পড়ে মরতে হচ্ছে। আর ট্রেনের ধাক্কায় নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ কোনো সরকারি মেডিকেলের মর্গে না নিয়ে আঞ্জুমান মফিদুলে নিয়ে গোসল করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

“সম্পূর্ণ অনাবাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ৭ ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সুবিধা পাচ্ছে। অথচ গত ১০ বছরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই পরিবহন খাতে আট কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। ভাড়া বাসের খরচ নিজস্ব বাসের চেয়ে আড়াই গুণ বেশি হলেও বাস কেনার দাবি উপেক্ষা করছে প্রশাসন। ফলে বাদুড় ঝোলা হয়ে আসার পথে যাচ্ছে মাসুকরা মারা গেলেও প্রশাসন নির্বিকার থেকে সরকারের শিক্ষা সংকোচন নীতি বাস্তবায়নে ব্যস্ত।”

কিশোর কুমার বলেন, ছাত্রী হলের বেসমেন্টের কাজ শেষ করতে যদি চার বছর লাগে তাহলে পূর্ণাঙ্গ হল হতে কতদিন লাগবে? ২৮ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ যদি চার বছরে শেষ হয় তাহলে মাত্র ১০০ কোটি টাকার ছাত্রী হলের প্রকল্পে দীর্ঘসূত্রিতা কার স্বার্থে?

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক তিথি চক্রবর্তী ও অর্থ সম্পাদক প্রসেনজিৎ সরকার।

সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে মাসব্যাপী স্বাক্ষর সংগ্রহ, ৩০ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের কাছে খোলা চিঠি প্রদান ও ৬ জুন উপাচার্যকে স্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।