বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজুভাস্কর্যের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কটূক্তি করায় বিএনপি নেতা গয়েশ্বরকে যেকোনো স্থানে ‘ধোলাই’ করার হুমকিও দেন তিনি।
সমাবেশে জাকির বলেন, “তিনি (খালেদা) দশ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তিনি নিজেই বাণী বিবৃতি দিয়েছেন, যা এই দেশের পত্র পত্রিকায় এসেছে।
“ক্ষমতায় থাকলে ২০টি বাণী দিয়েছেন; তিনি তখন বলেছিলেন ত্রিশ লক্ষ শহীদ এবং দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ের অর্জিত এই বাংলাদেশ।সুতরাং তখন খালেদা জিয়া কোথায় ছিলেন? ক্ষমতায় থাকতে কেন বলেননি; এখন কেন তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ শহীদ বীর সন্তানদের নিয়ে কটূক্তি করছেন।”
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও গয়েশ্বর চন্দ্রকে ‘পাকিস্তানি’ আখ্যায়িত করে দেশের মাটিতে তাদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি।
বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কটূক্তি করে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলাদেশে বসবাসের যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক।
জাকির বলেন, “এই গয়েশ্বর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কটূক্তি করেছেন। যাদের আত্মদানের বিনিময়ে এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি, স্বাধীনতা অর্জন করেছি- সেই বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গয়েশ্বরসহ যারা কটূক্তি করেন, তারা বাংলাদেশের বসবাস করার যোগ্য নয়।”
“হয় তাদেরকে পাকিস্তানে চলে যেতে হবে, নয় তাদেরকে যেখানেই পাওয়ার যাবে সেখানেই গণধোলাই দেওয়া হবে। গয়েশ্বর চন্দ্রকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই গণধোলাই দেওয়া হবে।”
গয়েশ্বরকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে দাবি করে এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, “ছাত্রলীগের একজন নেতাকর্মী বেঁচে থাকতে কোথাও তাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে দেওয়া হবে না।এই গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ‘অবাঞ্চিত’ ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “তাকে যেখানেই পাওয়ার যাবে প্রতিহত করবে ছাত্রলীগ কর্মীরা।”
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও জাতির পিতা সম্পর্কে কটূক্তি এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করায় ‘জঙ্গিমাতা’ খালেদা জিয়া ও গয়েশ্বর চন্দ্রের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে।
দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশে ঘুরে রাজুভাস্কর্যের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
খালেদাসহ যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তি করেছে তাদের নাগরিকত্ব বাতিলের দাবি জানান ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
তিনি বলেন, “ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে খালেদা মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করতেন, কিন্তু এখন বিশ্বাস করনে না। এটা তার একান্তই ভাণ্ডামি এবং পাগলামি।
“যারা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করছে, তাদের দেশ বসবাস করা অধিকার নেই। আমি মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কটূক্তির করার খালদাসহ সবার নাগরিকত্ব বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।”
ছাত্রদলের কমিটিকে ছাত্রলীগের নিন্দা
ছাত্রদলের ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে নিন্দা জানিয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন বলেন, “কয়েকদিন আগে ছাত্রদলের যে কমিটি হয়েছে, তাতে যারা পদ পেয়েছেন তাদের বয়স পঞ্চাশের অধিক। দেখতে চাচা খালু তাদের সন্তানের বয়স আমাদের মতো।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ‘চাচা মামা খালু কমিটির’ কাউকে পাওয়ার গেলে প্রতিহত করা হবে বলেও জানান তিনি।