মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে ধর্মঘট আহ্বান

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তুলে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক এসেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2015, 08:59 AM
Updated : 4 Oct 2015, 06:23 PM

এই দাবিতে রোববার প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়ে শাহবাগ মোড়ে পাঁচ ঘণ্টা অবস্থান ছেড়ে ওঠার আগে ৭ অক্টোবর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাবিব ইমন।

মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে পরীক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোও রয়েছে।   

ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, ছাত্র ইউনিয়নের সহ সভাপতি লিটন নন্দী, ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার শাহবাগের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।

শহীদ মিনারে অবস্থান

ভর্তিচ্ছু আন্দোলনকারীরা সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিছিল শুরু করে।

দুই দফা বাধার পর দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ মোড়ে এসে মিছিলকারীরা সড়কে অবস্থান নেয়। এতে আশপাশের সড়কে গাড়ির জটলা লেগে যায়।

শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির শুরুর পর শাহবাগ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন রুটের যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। চালকরা বিকল্প সড়ক ধরে তাদের গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা চালান।

শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়ে আসার পর বিকাল ৫টায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে সড়ক ছাড়ে আন্দোলনকারীরা।

ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ইমরান ৬ অক্টোবরের মধ্যে মেডিকেলে পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত পুলিশের বিচারের দাবি জানান।

তা না হলে ৭ অক্টোবর সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘটের কর্মসূচি দেন তিনি।

পুলিশের বাধা অতিক্রম করে শাহবাগের পথে

এছাড়া ৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল এবং ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে মশাল মিছিলের কর্মসূচিও জানানো হয়।

এদিকে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সমালোচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি বলে নিজে তদন্ত করে দেখেছেন তিনি।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৮৩ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪৮ হাজার ৪৪৮ জনকে যোগ্য জানিয়ে ফল ঘোষণা করা হয় ২০ সেপ্টেম্বর।

পরদিন থেকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু করেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের একাংশ।

ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার প্রধানমন্ত্রী স্মারকলিপি দেয় তারা।

শহীদ মিনার থেকে তাদের মিছিল শাহবাগের দিকে আসার পথে শাহবাগ থানা ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। মিছিলকারীরা সেই বাধা উপেক্ষা করেই শাহবাগে অবস্থান নেয়।

অবস্থানে ছিল অভিভাবকরাও

অবস্থানে ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি কয়েকজন অভিভাবকও অংশ নেন।

অবস্থানে থেকে শিক্ষার্থীদের তুলতে পুলিশ কয়েকবার তৎপরতা চালিয়েও ব্যর্থ হয়। দুপুরে আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করতেও দেখা যায়।

ডিএমপির রমনা জোনের উপকমিশনার মো. আব্দুল বাতেন তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “জনদুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদেরকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে তাদেরকে সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।”

এরপর বিকালে স্মারকলিপি দেওয়ার পর সড়ক থেকে ওঠে আন্দোলনকারীরা।