জগন্নাথে ভর্তি পরীক্ষায় ‘ড্রেসকোড’

ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি ঠেকাতে নিয়মিত বিধিনিষেধের সঙ্গে এবার পরীক্ষার্থীদের পোশাকের ক্ষেত্রেও অভিনব শর্ত আরোপের চিন্তাভাবনা চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কাজী নাফিয়া রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2015, 12:15 PM
Updated : 23 Sept 2015, 12:15 PM

মোবাইল ফোনসহ ইলকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেউ যাতে পরীক্ষায় বসতে না পারে সেজন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে ছেলেদের ফুলহাতা শার্ট ও জুতা-মোজার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান।

আর মেয়েদের স্কার্ফ ও হিজাব ব্যবহারের ক্ষেত্রেও থাকবে কড়া নজরদারি।

অধ্যাপক মীজান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরীক্ষার্থীরা ফুলহাতা শার্ট পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে পারবে না, হাফ হাতা পরতে হবে। এছাড়া জুতা-মোজা পায়ে আসতে পারবে না, স্যান্ডেল পরে আসতে হবে। এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান হাইকোর্টেরও একটি রায় আছে।”

তিনি বলেন, “স্কার্ফ-হিজাবসহ ধর্মীয় শালীনতার বিষয়গুলোতেও থাকবে বিশেষ চেকিং। কারণ গতবছর আমরা দেখেছি, কানে মাইক্রোচিপ ব্যবহার করে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করা হয়।”

এছাড়া মোবাইল ফোন, ঘড়ি ও ক্যালকুলেটরসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসে অন্য সময়ের মতই নিষেধাজ্ঞা থাকবে। পরীক্ষার আগে এসব নিয়মের বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে।

জালিয়াতি রোধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গতবছর শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের কয়েকটি সেট তৈরি করেছিল। এরপরও জালিয়াতির অভিযোগে পরীক্ষার্থীসহ ২১ জনকে আটক করা হয়। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া-নেওয়ার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।

এবার জালিয়াতি ঠেকাতে ‘আরও উন্নত প্রযুক্তি’ ব্যবহার করা হবে বলে উপচার্য জানান।

“পরীক্ষার্থীরা তো অসদুপায় অবলম্বন করে, গতবছরও করেছে। কিন্তু কিছু প্রযুক্তির ব্যবহার ও ভিন্ন ভিন্ন সেট করায় তারা সুবিধা করতে পারেনি। এবার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।”

ভর্তি পরীক্ষার আসন পরিকল্পনাতেও এবার পরিবর্তন আনা হবে।

“আগে এক বেঞ্চে তিনজন বসে পরীক্ষা দিয়েছে। এবার বসবে দুইজন করে। পরিদর্শকের সংখ্যাও বাড়ানো হবে,” বলেন মীজানুর রহমান।

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও জড়িয়ে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

“আগে নকল হত কাগজে লিখে। এখন অভিভাবকরা জড়িয়ে পড়ছেন। এর জন্য যে লাখ লাখ টাকা লাগে তা শিক্ষার্থীদের কাছে থাকে না, অভিভাবকরাই দিচ্ছে। তাহলে অভিভাবকদের অবস্থা কোথায় যাচ্ছে?”

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ওহিদুজ্জামান জানান, এবার মোট দুই হাজার ৭৬০টি আসনের বিপরীতে এক লাখ ৮৫ হাজার ৭৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। এই হিসেবে প্রতিটি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন ৬৭ জন শিক্ষার্থী।

এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৭৬০ আসনের বিপরীতে ৫৭ হাজার ৭০৩, ‘বি’ ইউনিটে ৭২০ আসনের বিপরীতে ৪০ হাজার ৬৩৪  এবং ‘সি’ ইউনিটে ৬২০ আসনের বিপরীতে ৩৪ হাজার ৬৮৮ জনের আবেদন জমা পড়েছে।

এছাড়া ‘ডি’ ইউনিটে ৫৬০ আসনের বিপরীতে ৪৯ হাজার ৯৩০ জন এবং ‘ই’ ইউনিটে ১০০টি আসনের বিপরীতে দুই হাজার ১২৪ জন আবেদন করেছেন।

আগামী ৯ অক্টোবর ‘বি’, ১৬ অক্টোবর ‘সি’, ৩০ অক্টোবর ‘এ’, ৬ নভেম্বর ‘ডি’ এবং ১৩ নভেম্বর ‘ই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে। প্রতিটি পরীক্ষা শুরু হবে বিকাল ৩টায়।

আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা jnu.teletalk.com.bd অথবা jnu.ac.bd ওয়েবসাইট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘বি’ ইউনিট, ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ‘সি’ ইউনিট, ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ‘এ’ ইউনিট, ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ‘ডি’ ইউনিট এবং ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ‘ই’ ইউনিটের প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।