চূড়ান্ত রায়: ঢাবিতে ভর্তি হতে সুযোগ একবারই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ চেয়ে করা আবেদন আপিল বিভাগেও খারিজ হয়ে গেছে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2015, 04:03 AM
Updated : 24 August 2015, 01:42 PM

ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুধুমাত্র সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাস শিক্ষার্থীরাই দেশে উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে বড় এই বিদ্যাপীঠে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। 

২৬ শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা লিভ টু আপিলের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সোমবার তা খারিজ করে দেয়। 

এদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের অনলাইন ভর্তি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ চেয়ে আদালতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষে আপিল বিভাগে শুনানি করেন আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এ এফ এম মেসবাহ উদ্দিন এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন।

আদেশের পর মেসবাহ উদ্দিন বলেন, “আপিল বিভাগ আবেদনটি খারিজ করে দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে না।”

আবেদনকারীদের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, “অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এখতিয়ার আছে সিদ্ধান্ত সংশোধন ও পরিবর্তন করার। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেখানে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই বলে হাই কোর্ট আমাদের রিট আবেদন খারিজ করেছিল। আগের দুই বছরের শিক্ষার্থীরাও যাতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারে সেজন্য আমরা লিভ টু আপিল করেছিলাম। আপিল বিভাগ সেটিও খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ থাকছে না।”

এইচএসসি উত্তীর্ণরা এতোদিন টানা দুইবার ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেলেও গতবছর তা সীমিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি ঠেকাতেই কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গতবছর ১৪ অক্টোবর ওই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় শুধু ওই বছর এইচএসসিতে উত্তীর্ণরাই অংশ নিতে পারবে; পুরনোরা নয়।

ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা সে সময় টানা কয়েক দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও অনশনের মতো কর্মসূচি পালন করেন। এরপর হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন দ্বিতীয়বার ভর্তিচ্ছু ২৬ শিক্ষার্থীর অভিভাবক।

তাদের আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গত ১৬ মার্চ হাই কোর্ট রুল দেয়। দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ বাতিল কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেইসঙ্গে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে আগের মত ভর্তির সুযোগ রেখে নতুন করে সিদ্ধান্ত কেন দেওয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়।

ওই রুলের ওপর শুনানি শেষে ৮ জুলাই হাই কোর্ট তা খারিজ করে রায় দেয়। 

দেশে উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় হাজার ৫৮২ আসনের বিপরীতে গতবছর পরীক্ষা দেন তিন লাখ এক হাজার ১৩৮ জন পরীক্ষার্থী।

আবেদনকারীপক্ষ এর বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে গেলে ২৯ জুলাই বিচারক বিষয়টি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগ আবেদনটি শুনলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই শেষ বিচারে বৈধতা পেল।