বেনাপোলে ৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য

নতুন অর্থবছরে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে তিন হাজার ১৪৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। অর্থের এই পরিমাণ গত অর্থবছরের আদায় করা রাজস্বের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি।

আসাদুজ্জামান আসাদ,বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2015, 03:12 AM
Updated : 8 July 2015, 04:03 AM

গেল অর্থবছরে (২০১৪-১৫) এ স্থলবন্দর থেকে ২ হাজার ৬২০ কোটি ৮৮ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করতে পেরেছে এনবিআর; যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার চেয়ে কম, ২ হাজার ৫১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

বেনাপোল শুল্ক ভবনের সহকারী কমিশনার রেজাউল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এবারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিয়ে একটি চিঠি মঙ্গলবার তাদের হাতে পৌঁছেছে।

চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে মোট ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে এনবিআরকে এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা আদায় করতে হবে, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।  

এই বিশাল লক্ষ্য পূরণে বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে তিন হাজার কোটি টাকা আদায় করার আশা করছে রাজস্ব বোর্ড।

বন্দরের শুল্ক কর্মকর্তারা এ লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব বলে মনে করলেও ব্যবসায়ীরা তা নিয়ে সন্দিহান। তারা বলছেন, গত অর্থবছর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও আগের তিন অর্থবছরে বেনাপোল শুল্কভবন কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব পায়নি।

রেজাউল ইসলাম জানান, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয় দুই হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৬২০ কোটি টাকা, আদায় হয়েছিল দুই হাজার ২০৩ কোটি টাকা।

তার আগে ২০১১-১২ অর্থবছরে দুই হাজার ৪২৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয় দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা।

বেনাপোল শুল্ক ভবনে ‘নিয়ম বহির্ভূত জরিমানা আদায়’ ও ‘হয়রানির’ অভিযোগ এনে বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুল্ক কর্তৃপক্ষের ‘নিত্যনতুন নিয়ম’ ও কড়াকড়ি আরোপের কারণে উচ্চ শুল্কহারের পণ্য এ বন্দর দিয়ে আমদানি হচ্ছে না। অথচ ওইসব পণ্য চোরাই পথে দেশে ঢুকছে।

ব্যবসায়ীরা বেনাপোল দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া না করে অন্য বন্দরে চলে গেলে রাজস্ব আদায় বাধাগ্রস্ত হবে বলে তিনি সতর্ক করেন।

বেনাপোল শুল্ক ভবনের কমিশনার এএফএম আব্দুল্লাহ খান বলেন, “বেনাপোল শুল্ক ভবনে শুল্কায়নে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনাসহ বন্দরের বিভিন্ন অনিয়ম দূর করা হয়েছে। এর ফলে গত চার বছরের মধ্যে এবারই প্রথম রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।”

হয়রানির অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলেন, দেশের অন্য শুল্ক স্টেশনের তুলনায় বেনাপোলে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ হচ্ছে।