চড়ছে তেল-মসলার দাম, কমেছে সবজির

ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর বাজারগুলোতে চড়তে শুরু করেছে মসলার দাম। তবে দাম কমেছে সবজির।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2015, 01:48 PM
Updated : 3 July 2015, 01:48 PM

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, ভোজ্যতেল (সয়াবিন, পাম অয়েল), আদা, রসুন, পেঁয়াজ, শুকনা মরিচ, জিরার দাম বেড়েছে। দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গসহ অন্যান্য গরম মসলার বাজারও চড়া। 

অতিরিক্ত চাহিদার কারণে দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

রমজানে এসব পণ্যের চাহিদা অন্যান্য মাসের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে যায় বলে বাণিজ্যমন্ত্রনালয়ের এক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে।

সাপ্তাহিক এই ছুটির দিনে গোপীবাগ, মানিকনগর, মুগদা, ফকিরেরপুল ও মহাখালী বাজার ঘুরে দেখা গেছে বেগুন, শসা, আলুসহ অন্যান্য সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। তবে বেড়েছে ডিম ও মুরগির দাম।  

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সয়াবিনের এক লিটারের বোতল গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৯৮ টাকায় মিললেও শুক্রবারে তা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। একইভাবে ৫ লিটারের বোতলেও দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত।

৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল কোম্পানিভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা থেকে ৪৮৫ টাকা পর্যন্ত। আর পাম অয়েল লিটারে এক টাকা বেড়ে ৬৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজ পাওয়া গেলেও শুক্রবার ৪৮ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে।

গত মাস থেকে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি মূল্য বেড়েছে।

আমদানি করা রসুনের দামও বেড়ে ১১০ টাকা থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। আমদানি করা আদা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুকনো মরিচের কেজি প্রতি দাম উঠেছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। রোজার শুরুর দিকে এই মরিচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মানভেদে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। রোজা শুরুর আগে জিরা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

দারুচিনি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, লবঙ্গ ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা আর এলাচ ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব মসলার দামে বিশেষ হেরফের হয়নি বলে জানান গোপীবাগ বাজারের মসলা ব্যবসায়ী আতাউর রহমান।

তিনি মসলার দাম প্রসঙ্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাজারে চাহিদা বাড়লে দাম একটু বাড়বে এটা স্বাভাবিক। এছাড়া ঈদের আগে ব্যবসায়ীদেরও বেশি দামে কিনতে হয়, আবার পরিবহন ও অন্যান্য খরচও বেশি হয়। ফলে খুচরা দাম একটু বাড়বেই।”

বাজারে কোন পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়েনি বলেও দাবি করেন এই বিক্রেতা।

এদিকে গোল বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা আর লম্বা বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও বেগুনের দাম ছিলো ৬০ থেকে ৮০ টাকা।

আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে। আলুর দাম রোজার শুরুর পরে ২২ থেকে ২৫ টাকায় ওঠে। শসা ৪০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে, যা গত সপ্তাহে কিনতে হয়েছে ৫০ টাকা বা তার বেশি দামে।

অন্যান্য সবজি বিশেষকরে ঝিংগা, বরবটি, মিস্টি কুমড়া, লাউ, পেপে, কচুরমুখী ইত্যাদি ৪০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।

তবে বেড়েছে কাঁচা মরিচ ও টমাটোর দাম। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচও টমাটো ৮০ টাকা বা তার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের দাম গত সপ্তাহে কমে প্রতি হালি ২৮ টাকায় নেমে এলেও শুক্রবার তা বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকায়।

আর দেশি মুরগির দাম কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৩৫০ টাকার দেশি মুরগি শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৩৮০ টাকা।

তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে দাম ছিলো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।

শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ৎ বণিক সমিতির সভাপতি হাজি মো. সাঈদ টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে আমাদের বাজারে। তবে এই দাম বেশিদিন থাকবে, কমবে।”

রমজান ও ঈদের চাহিদা অনুয়ায়ী রসুন, শুকনো মরিচ, আদা, জিরার দাম তেমন বাড়েনি বলেও দাবি করেন তিনি।