দূষণ: আরসি কোলার কারখানা বন্ধের নির্দেশ

পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুরে পারটেক্স বেভারেজের কারখানায় উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই কারখানায় কোমল পানীয় আরসি কোলা, আরসি লেমন, আপার টেন তৈরি হয়।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2015, 11:33 AM
Updated : 20 May 2015, 12:15 PM

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মির্জাপুরের বাংলাবাজার এলাকায় পারটেক্স বেভারেজের কারখানা থেকে নিঃসৃত তরল বর্জ্যে এলাকায় পানি দূষণ, জলাবদ্ধতা ও ফসলের ক্ষতির অভিযোগ করে আসছিল এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার তারা রাজেন্দ্রপুর-বাংলাবাজার সড়ক অবরোধ করে এবং জেলা প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়ে এই সমস্যা সমাধানের দাবি জানায়। 

এরপর বুধবার পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে যান জেলা প্রশাসক মো. নূরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সোনিয়া সুলতানাসহ কর্মকর্তারা।

তারা বাংলাবাজার এলাকায় পৌঁছলে স্থানীয়রা তাদের ক্ষতির চিত্র ঘুরে দেখান এবং পারটেক্স বেভারেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। 

সরেজমিন পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসক নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই কারখানায় সকল প্রকার পানীয় উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

সেইসঙ্গে অভিযোগ তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট  মোহাম্মদ হোসেন।

মোহাম্মদ হোসেনকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটির সদস্যরা হলেন গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কারখানার ব্যবস্থাপক।

তাদের পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষ তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না রেখে উৎপাদন চালিয়ে আসছে। উন্মুক্ত স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া বর্জ্যে কারখানার আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে এবং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে দুর্ভোগ তৈরি করেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, এই কারখানার তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা তারা দেখেননি। এতে ওই এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে তা ঢাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সরেজমিন পরিদর্শনে যাওয়া হয়।

তবে কারখানার মহাব্যবস্থাপক মো. দিদারুল আলমের দাবি, জলাবদ্ধতার জন্য তাদের কারখানার তরল বর্জ্য দায়ী নয়।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কারখানার পানি বাইরে যায় না। বাইরের এলাকার পানিই আমার কারখানার ভেতরে চলে আসে।”

তবে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে জমে থাকা এই পানি সরাতে ড্রেনের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ নিতে জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেন দিদার।

পারটেক্স গ্রুপের অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান পারটেক্স বেভারেজ। এই শিল্প পরিবারের কর্ণধার বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হাশেম।