মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ‘অযৌক্তিক’ এই কর প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবি জানায় চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ট্রেইলার মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঐক্য পরিষদের নেতা ও চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ট্রেইলার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম আকতার।
তিনি বলেন, “ট্রেইলারের উপর সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত কর ছিল পাঁচশ টাকা। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তা বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। বিআরটিএ ডকুমেন্ট ফি বাড়িয়েছে চারগুণ।
“মুভার (ইঞ্জিনসহ সামনের অংশ) ও ট্রেইলার (কন্টেইনার বহনকারী পেছনের অংশ) একই গাড়ির অংশ হলেও বিআরটিএ আলাদা রেজিস্ট্রেশনের আইন করেছে। যোগাযোগমন্ত্রী এ আইন সংশোধনের নির্দেশ দিলেও গত আড়াই বছরে তা কার্যকর হয়নি।”
এই ট্রেইলার মালিক বলেন, ট্রেইলারের জন্য চট্টগ্রামে কোনো টার্মিনাল না থাকায় বন্দরে প্রবেশের সময় গাড়িগুলোকে সারি বেঁধে বিমান বন্দর সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ কারণে শহরে নিত্য যানজটের সৃষ্টি হয়।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সরকারি অব্যবস্থাপনা, পণ্যসহ গাড়ি অপহরণ, দুস্কৃতকারীর হাতে চালক-শ্রমিকের মৃত্যু, সড়কে চাঁদাবাজি এবং কর বৃদ্ধির কারণে এই খাত লোকসানের মুখে পড়েছে।
“সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যেন এ খাতকে ধ্বংস করতে অঘোষিত যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৩ সালের শেষ তিন মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৫০টি ট্রেইলার আংশিক ও তিনটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১২ জন চালক ও ১২ জন সহকারী দগ্ধ হন। আহত হন আরও ৪০ জন শ্রমিক।
আকতার বলেন, “অন্য গাড়ির শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ পেলেও ট্রেইলার মালিক-শ্রমিকরা কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি।
“এরপরও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চলতি বছর রাজনৈতিক সহিংসতায় আমরা সারা দেশে মালামাল পৌঁছে দিয়েছি।”
চট্টগ্রাম বন্দর এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবোঝাই কন্টেইনার বহনে চট্টগ্রামে ৪ হাজার ৪০০ ট্রেইলার চলাচল করে। ভারী এই যানবাহনের মালিক ও শ্রমিকদের সংগঠনে সাত হাজারের বেশি সদস্য রয়েছে।
তাদের ছয় দফা দাবি হলো- সিটি করপোরেশন ও বিআরটিএ কর্তৃক আরোপিত অযৌক্তিক কর প্রত্যাহার, মুভার ও ট্রেইলার একই রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা, ভারী যানবাহন হিসেবে সনদ প্রদান, টার্মিনাল নির্মাণ, চাঁদাবাজি বন্ধ ও হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করা।
এ কে এম আকতার বলেন, “আমরা আন্দোলন নয় সংলাপে বিশ্বাসী। আশা করি, প্রধানমন্ত্রী, পরিবহনমন্ত্রী, নৌমন্ত্রী ও মেয়র এবিষয়ে সুনজর দেবেন।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. আবুল হাশেম, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মাওলা, যুগ্ম সদস্য সচিব মো. হুমায়ুন কবির ও ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি এনামুল হক।