বাজারে নতুন বোরো, চালের দাম কমছে

বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসতে থাকায় দেশের প্রধান এই ভোগ্যপণ্যের বাজার কিছুটা শিথিল হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2015, 03:19 PM
Updated : 1 May 2015, 03:19 PM

ব্যবসায়ীরা জানান, এক মাসের ব্যবধানে বিভিন্ন জাতের চালের দাম কেজিতে দুই টাকা থেকে চার টাকা  কমেছে।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মিনিকেট ও নাজিরশাইলসহ অন্যান্য সরু চাল ৩৮ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী আবুবকর সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এক মাস আগে তিনি এসব চাল মানভেদে ৪০ থেকে ৫৬ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।

এই আড়ৎদার জানান, পারিজা, বিআর-২৮, হাসকিসহ মাঝারি মানের চাল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, আর মোটা ধরণের চাল স্বর্ণা ও গুটি বিক্রি হচ্ছে ৩৩ থেকে ৩৪ টাকা কেজি দরে।

তিনি বলেন, “এসব চালও এক মাস আগে দেড় থেকে ২ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে।”

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, এক মাসের ব্যবধানে সরু চালের দাম ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, মাঝারি মানের চালের দাম ২ দশমিক ২৭ শতাংশ আর মোটা চালের দাম ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমেছে।

মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন বোরো চাল বাজারে আসার পাশপাশি চাল আমদানি ও পরিবহন খরচ কমায় দামে প্রভাব পড়েছে।

এবছর সরকার ৮৮০ টাকা দরে প্রতিমণ (৪০ কেজি) চাল কেনার ঘোষণা দিলেও বাজারে নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর‌্যন্ত। তবে এখন যেসব ধান বিক্রি হচ্ছে তা গুদামজাত করার মতো নয়।

কুষ্টিয়ার খাজা নগরের স্বর্ণা এগ্রোফুডের মালিক আব্দুস সামাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে টেলিফোনে বলেন, “বর্তমান বাজারে যেসব আসছে সেগুলো ভেজা বা রসওয়ালা ধান। এসব ধান ৬৪০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ (সাড়ে ৩৭ কেজি) দরে কেনাবেচা হচ্ছে। আর প্রতিমণ ৪০ কেজি হিসেবে শুকনো ধান বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৭৯০ টাকা দরে।

সামাদ বলেন, “আমরা মিল চালু করতে পারছি না। বাজার আমদানি করা চালে সয়লাব। এসব চাল আসতে থাকলে মিল চালু করা কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে কৃষকরাও নায্য দাম পাবে না।”

বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, “চাল নেওয়ার লোক নেই। ধান কিনে কি করবো। ধান কেনার টাকাও নেই। কারণ আগে যেসব ধান কিনেছিলাম সেগুলোই বিক্রি করতে পারিনি।

“এক দিকে তিনমাস ধরে অবরোধ-হরতাল গেল। আবার আমদানি করা চালের কারণেও আমরা চাল বিক্রি করতে পারছি না। দাম অনেক কম।”

জয়পুর হাটের এই ব্যবসায়ী জানান, জয়পুরহাটসহ এলাকার বিভিন্ন মোকামে প্রতিমণ মোটা ও মাঝারি চালের ধান ৪৮০ থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এবারের বোরো মৌসুমে এক কোটি ৯০ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য ধরেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর মধ্য থেকে ১০ টন চাল ও এক লাখ টন ধান কিনবে সরকার।

এই মৌসুমে  ৩২ টাকা কেজি দরে চাল ও ২২ টাকা কেজি দরে ধান কেনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।  গত বছরও ৩১ টাকা দরে চাল ও ২০ টাকা কেজি দরে ধান সংগ্রহ করে সরকার।