‘বিকল্প ব্যবস্থায়’ ইউনাইটেডের ফ্লাইট চালু

বৈমানিকদের ধর্মঘটের কারণে তিনদিন ফ্লাইট বন্ধ থাকার পর শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ‘বিকল্প ব্যবস্থায়’ অভ্যন্তরীণ রুটে কার্যক্রম শুরু করেছে বেসরকারি বিমান পরিবহনসংস্থা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2015, 01:23 PM
Updated : 24 April 2015, 01:58 PM

এক মাসের বেতন বকেয়া থাকায় বুধবার সকাল থেকে ইউনাইটেডের বৈমানিকরা ধর্মঘট শুরু করেন। এতে সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়।

বৈমানিকরা কর্মবিরতি থেকে সরে না আসায় বাইরে থেকে পাইলট এনে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা-যশোর রুটে ফ্লাইট শুরু করা হয় বলে ইউনাইটেডের এজিএম (মার্কেটিং অ্যান্ড পিআর) কামরুল ইসলাম জানান।

তিনি বলেন, “শনিবার চট্টগ্রাম থেকে জেদ্দার আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালানো হবে। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর ও যশোরের ফ্লাইটগুলোও যথা সময়ে ছাড়বে।”

এর আগে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ বলেছিল, বৈমানিকরা কাজে না ফিরলে দ্রুততম সময়ে ক্যাপ্টেন নিয়োগের মাধ্যমে ‘উদ্ভূত সমস্যার’ সমাধান করা হবে।

কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাইলটরা এখনো ধর্মঘটে থাকায় বিকল্প ব্যাবস্থায় ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে ফ্লাইট স্বাভাবিক করে ফেলা হবে।”

গত দুই দিনে আন্তর্জাতিক রুটের চারটি এবং অভ্যন্তরীণ সাতটি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে ইউনাইটেডকে, যে সংস্থার সেবা নিয়ে আগে থেকেই নানা অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের।

গত বছর সেপ্টেম্বরে কোম্পানির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে কয়েক দিন ইউনাইটেডের ফ্লাইট বন্ধ ছিল। তখন যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এবার বৈমানিক ধর্মঘটে জটিলতা দেখা দিল। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমানে আমাদের ১২ জন বৈমানিক রয়েছেন। তারাই প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ বেতনধারী কর্মকর্তা। মার্চ মাসের বেতন বকেয়া থাকায় তারা মঙ্গলবার রাত থেকে ফ্লাইট চালাচ্ছেন না।”

পাইলটরা ধর্মঘটে থাকলেও ফার্স্ট অফিসার বা সহকারী পাইলটরা ধর্মঘটে নেই বলে জানান তিনি।

ধর্মঘটীদের বিষয়ে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “তাদের অস্বাভাবিক ও উদ্দেশ্যমূলক দাবি পরোক্ষভাবে কোম্পানির অগ্রযাত্রাকে শুধু ব্যাহতই করছে না, সার্বিকভাবে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে বন্ধ করার পাঁয়তারা চলছে বলেই ধারণা হয়।”

এতে বলা হয়, বাতিল হওয়া ফ্লাইটের যাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে যাদের ভিসা জটিলতা আছে তাদের প্রাধান্য দিয়ে বাংলাদেশ বিমানসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী যাত্রীদের নির্দিষ্ট ট্রাভেল এজেন্সি কিংবা এয়ারলাইন্সের নিজস্ব সেলস অফিসে যোগাযোগ করতে বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।

২০০৫ সালে লাইসেন্স নেওয়ার দুই বছর পর যাত্রী পরিবহন শুরু করা ইউনাইটেড ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক রুট জেদ্দা, দুবাই, মাস্কাট, কুয়ালা লামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, কাঠমান্ডু, কলকাতা এবং চট্টগ্রাম থেকে মাস্কাট ও কলকাতায় ফ্লাইট চালায়।

এছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, রাজশাহী, সৈয়দপুর, ঈশ্বরদী ও বরিশালে তাদেরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলে।

ইউনাইটেডের বহরে রয়েছে একটি ড্যাশ-৮, তিনটি এটিআর-৭২, পাঁচটি এমডি-৮৩ এবং দুটি এয়ারবাস-৩১০ সহ মোট ১১টি উড়োজাহাজ।