বিএসটিআইয়ের সনদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ উন্নত বিশ্বের বাজারগুলোতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হলেও ভারত তার স্বীকৃতি দেয় না।
এই অশুল্ক বাধা দূর করা গেলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমোনো সম্ভব হবে বলে মত দিয়েছেন একটি আলোচনা সভার বক্তারা।
শনিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডি আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যে অশুল্ক বাধা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব পরামর্শ দেন তারা।
সভায় দেশের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ও পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তারা।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) সভাপতি মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অমিতাভ চক্রবর্তী ও প্রাণ আরএফএল গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তানভীর ইসলাম।
মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ভারতের বাজারে বাংলাদেশ থেকে যা রপ্তানি হচ্ছে তার ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক শিল্পের বাইরে, বিশেষ করে কৃষি পণ্য। এসব পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসটিআইয়ের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে।”
“যাতে ভারত আমাদের পণ্য গ্রহণ করতে পারে আর আমরাও যেন ভারতে পণ্য গ্রহণ করতে পারি, সেজন্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হতে পারে।”
সভায় বেনাপোল-পেট্রাপোল, আখাওড়া-আগরতলা, হিলি, ভোমরা-ঘোজাডাঙ্গা এবং তামাবিল বন্দরে জরীপ চালিয়ে তৈরি সিপিডির একটি সমীক্ষাপত্র উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ গবেষক খালেদা আক্তার।
তিনি বলেন, “সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতের সব বন্দরেই বাংলাদেশের বিএসটিআই ও অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ডের সনদ নিয়ে পণ্য প্রবেশ করতে বাধা পাচ্ছে।”
এক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মধ্যে চুক্তি হলে বিষয়টি সমাধান হতে পারে বলে মত দেন তিনি।
সেলিম রায়হান বলেন, ভারতের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়াতে হলে অবশ্যই পণ্যের বহুমূখীকরণ করতে হবে। বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক মানের কৃষি পণ্য ভারতের বাজারে রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে।”
তানভীর ইসলাম বলেন, “ভারতীয় বাজারমূল্য ও মান সংবেদনশীল। একটি সনদের জন্য ১৫ দিন ও ৫০০ মাইল দূরে যেতে হয়। এসব বাধা আরো সহজ করা হলে ভারতের বাজারে রপ্তানি আরো বাড়বে।
এজন্য বন্ধুপ্রতীম দুদেশের সরকারি পর্য়ায়ে সমন্বয়ে করে তা সহজীকরণের উপর জোর দেন তিনি।
সভায় বক্তারা বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশকে শুল্মুক্ত সুবিধা দেওয়ার পরও নানা রকম অশুল্ক বাধার কারণে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
এসব অশুল্ক বাধা দূর করতে দুদেশের সরকারকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের পরামর্শ দেন তারা।