নিত্যপণ্য: আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে বিস্তর ফারাক

আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক বছরে ভোজ্যতেল, চিনি ও আটার দাম যে হারে কমেছে, বাংলাদেশের বাজারে এই আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম সেই হারে কমেনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2015, 06:07 PM
Updated : 11 April 2015, 06:07 PM

আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্যের দামের প্রবণতার ওপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সর্বশেষ প্রতিবেদন ও ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে এই চিত্র উঠে এসেছে।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছরের ৬ এপ্রিল থেকে এ বছরের একই সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ৩২ শতাংশ। আর পাম অয়েলের দাম কমেছে ২০ শতাংশ।

এ সময়ে অপরিশোধিত চিনির দাম কমেছে ২৬ শতাংশ এরং পরিশোধিত চিনির দাম কমেছে ৫১ শতাংশ। আর গমের দাম কমেছে ২৪ শতাংশ।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক বছরে দেশে পরিশোধিত সয়াবিনের দাম কমেছে সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ, আর পাম অয়েলের দাম কমেছে ২০ শতাংশ।

সরাকারি এই সংস্থার তথ্যে, এই সময়ে চিনির দাম সাড়ে ৪ শতাংশ আর আটা-ময়দার দাম সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ শতাংশ কমেছে।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক বাজারে এক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৬৪ হাজার ৪০৮ টাকায়, যা একবছর আগে বিক্রি হয়েছে ৯৪ হাজার ৬৪৩ টাকায়।

এদিন আন্তর্জাতিক বাজারে পামঅয়েল বিক্রি হয়েছে প্রতিটন ৫২ হাজার ৫৯৪ টাকায়, যা একবছর আগে ছিল ৬৫ হাজার ৭৪২ টাকা।

প্রতিটন পরিশোধিত চিনির বর্তমান দাম ৩৩ হাজার ২৩০ টাকা। আর অপরিশোধিত চিনির দাম ২৬ হাজার ৯৭৫ টাকা। একবছর এটি যথাক্রমে ৬৭ হাজার ৫৬৮ আর ৩৬ হাজার ৪৮৪ টাকা।

আর একবছর আগে যে গমের দাম ছিল প্রতি টন ২৬ হাজার ৬৮০ টাকা বর্তমানে তা তা ২০ হাজার ৩০৪ টাকায় মিলছে।

প্রতি ডলার ৭৯ টাকা ধরে এই দর হিসাব করেছে ট্যারিফ কমিশন।

দেশে সাতটি কোম্পানি ভোজ্যতেল ও চিনি পরিশোধন করে। আটা-ময়দা বাজারজাত করে করে ১০-১২টি কোম্পানি। তারা এসব অপরিশোধিত পণ্যের সঙ্গে আমদানি, পরিশোধন, মোড়কীকরণ, বাজারজাতকারণ ব্যয় ও মুনাফা যোগ করে স্থানীয় বাজারের জন্য দাম নির্ধারণ করে।

একবছরে তিন ধরনের নিত্যপণ্যের দাম কমলেও আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় হয়নি বলে স্বীকারও করেছেন একটি ভোজ্যতেল ও চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানির একজন বিপণন কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোম্পানিগুলো চাইলেও গত তিন মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দাম কমাতে পারেনি। কারণ অবরোধ-হরতালের কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা খুবই ব্যহত হয়েছে। এছাড়া পরিবহন খরচ, পোর্ট ড্যামারেজ বেড়েছে।”

তবে দেশের বাজারে এসব পণ্যের দাম সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে জানিয়ে এ ব্যাপারে এখনই উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মত দিয়েছে কমিশন।