আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ অবলোপনে নীতিমালা

পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ অবলোপনের (রাইট অফ) বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2015, 04:37 PM
Updated : 8 April 2015, 04:37 PM

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে ‘ঋণ সুবিধা অবলোপন ও মওকুফ সম্পর্কিত নীতিমালা’ শীর্ষক সার্কুলার জারি করা হয়।

সার্কুলারে অবলোপন করা ঋণের ক্ষেত্রে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ ও পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করে বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো অবস্থাতেই ঋণগ্রহীতা ব্যক্তির মূল ঋণ বা আসল মওকুফ করে দিতে পারবে না।

“শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ঋণ অবলোপনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে।”

এছাড়া ৫০ হাজার টাকার ওপরে ঋণ অবলোপনের আগে আদালতে মামলা দায়ের করাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

রাইট অফ বা ঋণ অবলোপন হল- সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূল ব্যালান্স শিট থেকে ‘ওই’ ঋণকে অন্য আরেকটি লেজারে সরিয়ে নেওয়া।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, কেবল মন্দ বা ক্ষতি হিসেবে শ্রেণিকৃত এবং শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করা আছে- এমন ঋণ অবলোপন করা যাবে। অবলোপনের জন্য নির্বাচিত ঋণের বিপরীতে আগে কোনো কারণে আইনগত ব্যবস্থা গৃহীত না হয়ে থাকলে সেটি অবলোপনের আগে অবশ্যই মামলা দায়ের করতে হবে।

“তবে ৫০ হাজার টাকা বা এর নিচের অঙ্কের ঋণ মামলা ছাড়াই অবলোপন করা যাবে। পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া কোন ঋণ অবলোপন করা যাবে না। অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।”

“এছাড়া অবলোপনকৃত ঋণ সম্পর্কিত মামলা নিষ্পত্তি তরান্বিত করা বা অবলোপন করা অর্থ আদায়ের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো তৃতীয় কোনো পক্ষকে নিয়োগ করতে পারবে।”

ঋণ অবলোপনের পর সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতাকে খেলাপি হিসেবে উল্লেখপূর্বক তা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) রির্পোট করতে হবে।

এছাড়া প্রতি ত্রৈমাসিকে ঋণ অবলোপনের প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সার্কুলারে।

খেলাপি ঋণ শ্রেণিকরণে সাধারণত ৩টি ক্যাটাগরি আছে। সাব স্ট্যান্ডার্ড, ডাউটফুল এবং মন্দ ঋণ।

যেসব ঋণ মন্দ ক্যটাগরিতে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকে সেগুলোকেই রাইট অফের মাধ্যমে ব্যালান্স শিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। সাধারণত খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখাতেই এটি করা হয়ে থাকে। তবে মূল ব্যালান্স শিট থেকে বাদ দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, এই ঋণ আর আদায় করা যাবে না বা আদায় হবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মেনে চলতে প্রধান নির্বাহীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকিং খাতে ঋণ অবলোপনের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে।