বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে জারি করা এই নীতিমালাটি সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিকভিত্তি সুদৃঢ়করণ, আমানতের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, আমানতকারিদের আস্থা অর্জন, সর্বোপরি সুশাসন ও জনস্বার্থ নিশ্চিতকরার লক্ষে এ নীতিমালা জারি করা হয়।
এর আগে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের নিয়োগ ও অপসারণ বিষয়ে এরকম একটি নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রধান নির্বাহীদের অপসারণে তেমন কোন জবাবদিহি না থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা নামে-বেনামে ঋণ দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করছেন বলে সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটি সুরক্ষা নীতি দাবি করেন।
নতুন নীতিমালায় প্রধান নির্বাহীর নিয়োগের চুক্তির মেয়াদপুর্তির আগে পদত্যাগ বা অপসারণের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক মাসের নোটিস দিতে বলা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাহী নিজে পদত্যাগ করতে চাইলে এর কারণ উল্লেখ করে পরিচালনা পর্ষদকে নোটিস করতে হবে এবং নোটিসের অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংককে পাঠাতে হবে।
একই ভাবে পর্ষদ প্রধান নির্বাহীকে অপসারণ করতে চাইলেও কারণ উল্লেখ করে কমপক্ষে এক মাস আগে নোটিস দিতে হবে এবং ওই নোটিসের অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে অপসারণের অনুমোদন নিতে হবে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না মিললে প্রধান নির্বাহীকে অপসারণ বা পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না বলে নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়া প্রধান নির্বাহীর পদ শূন্য হলে প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিকভাবে ওই পদের ঠিক আগের পদের কর্মকর্তাকে তিন মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া যাবে। তবে বিষয়টি চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর নিয়োগ বাতিল করতে পারবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।
অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান ও প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদ খান এ বিষয়ে বলেন, “আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসনের চর্চা করতে হলে প্রধান নির্বাহীদের সুরক্ষা দিতে হবে। এই নীতিমালাকে আমরা স্বাগত জানাই। এটা এই খাতের প্রতিষ্ঠানের সুশাসনকে আলও উন্নত করবে।”
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ৬৫ বছরের বেশি বয়স হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর পদে থাকা যাবে না। প্রধান নির্বাহীর নিয়োগের মেয়াদ হবে অন্যূন তিন বছর। উৎসাহ বোনাস বছরে ১০ লাখ টাকার বেশি হবে না।
এর বাইরে পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থিতির জন্য প্রধান নির্বাহী কোন সম্মানী বা ভাতা নিতে পারবেন না।