এ লক্ষ্য পূরণ হলে ৪০ লাখ গ্রাহকের এ ব্যাংকের এটিএম বুথের সংখ্যা ৪ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে যাবে, যা হবে দেশের মোট এটিএম বুথের ৬১ শতাংশ।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মোহাম্মদ শিরিন জানান, তাদের পরিচালনা পর্ষদ সম্প্রতি নতুন এটিএম বুথ বসানোর এই প্রকল্প অনুমোদন করেছে। নতুন বুথের মেশিন আমদানির জন্য ইতোমধ্যে কার্যাদেশও দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে ব্যাংকের ক্যাশ বিভাগ ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন আবুল কাশেম।
ক্যাশ বিভাগে নতুন জনবল নিয়েগের জন্য নতুন বেতন কাঠামোও করা হয়েছে, যা কার্যকর হয়েছে মার্চের শুরু থেকে। নতুন এই কাঠামোতে ক্যাশ বিভাগে সৃষ্টি করা হয়েছে ছয়টি পদ।
তবে এর আগে ক্যাশ কর্মকর্তা হিসাবে যারা ব্যাংকে যোগ দিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে নতুন বেতন কাঠামো প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস তাবরেজ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ব্যাপক পরিমানে নগদ লেনদেনের পরিকল্পনা থেকে ক্যাশ বিভাগ নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ক্যাশ কর্মকর্তাদের বেতন কাঠামোও নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে।”
এ কে এম শিরিন বলেন, “আমরা এটিএম বুথ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। এটিএম বুথ হচ্ছে ব্যাংকের গ্রাহককের সুবিধা অনুযায়ী টাকা তোলার ব্যবস্থা। কিন্তু সেই টাকা তোলার জন্য টাকাতো জমা দিতে হবে। কারণ আমাদের দেশে ৯০ ভাগের বেশি গ্রাহক ডেবিট কার্ড (নিজের সঞ্চয়ী হিসাব থেকে টাকা তোলার কার্ড) ব্যবহার করেন। এ বিপুল পরিমাণ টাকা জমা নেয়ার জন্যই ক্যাশ বিভাগ ঢেলে সাজানো হচ্ছে।”
বিআইবিএম-এর এক গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি জানান, ভারতে যেখানে প্রতি এক লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য ১১টি এটিএম বুথ রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে বুথ রয়েছে ৫টি। যুক্তরাষ্ট্রে এই সংখ্যা ১৫০ এর কাছাকাছি।
ডাচ-বাংলা ব্যাংক বর্তমানে ২ হাজার ৭৩০টি এটিএম বুথের মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে। জার্মানি ও হাঙ্গেরি থেকে যন্ত্রপতি এনে নতুন দুই হাজার বুথ বসাতে তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগ লাগবে ২০০ কোটি টাকা।
ব্যাংকের ডিএমডি বলেন, “এগুলোর অধিকাংশই বসবে পল্লী এলাকায়। মোবাইল ব্যাংকিং ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় বিপুল পরিমাণ গ্রাহক তৈরি হচ্ছে। এদের সাপোর্ট দেওয়ার জন্য পল্লী এলাকায় প্রচুর এটিএম বুথ দরকার।”
গত দুই দশকে দেশে অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথ সেবার পরিধি বহুগুণ বেড়েছে। ১৯৯২ সালে একটি মাত্র এটিএম বুথ দিয়ে শুরু হয় এর যাত্রা।
বর্তমানে দেশে কার্যরত ৫৬টি ব্যাংকের এটিএম বুথের সংখ্যা ৫ হাজার ৬৬১টি। এসব মেশিনে বছরে লেনদেনে হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
টাকা তোলার পাশাপাশি ৮ শতাংশ ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে মোবাইল ব্যাংকি সেবা পাওয়া যায় এবং ৮ শতাংশ বুথে টাকা জমাও করা যায়।