টানা অবরোধে আবাসন খাতে ক্ষতি ‘৮০০ কোটি টাকা’

বিরোধী জোটের হরতাল-অবরোধে আবাসন খাতে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- রিহ্যাব।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2015, 06:14 PM
Updated : 28 Jan 2015, 06:14 PM

লাগাতার অবরোধের মধ্যে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান এই হিসাব তুলে ধরেন।

নতুন বছরের শুরুতেই রাজনৈতিক অস্থিরতায় উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যেই গত ৫ জানুয়ারি লাগতার অবরোধের ডাক দেন ২০ দলের নেত্রী খালেদা জিয়া।

বিক্ষিপ্ত বোমাবাজি ও গাড়ি পোড়ানোর মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি চলছে। নাশকতায় প্রাণহানির পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের অনেক পণ্য নষ্ট হয়েছে, মহাসড়কে পণ্য পরিবহনও হচ্ছে বিঘ্নিত।   

জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জীবন ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিহারের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্রেতারা এখন আর আবাসন খাতে কোনো বিনিয়োগ করছে না। চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তারা পরিশোধ করতে পারছে না।

“অধিকাংশ ব্যবসায়ী বেশি সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংকগুলো ডেভেলপারদের ঋণ খেলাপি হিসেবে ঘোষণা করছে। পরিস্থিতির উন্নয়ন না হলে কেউই এসব ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না।”

এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে অঅবাসন খাতের ঋণ সুদ মওকুফসহ দুই বৎসরের জন্য পুনঃতফশিলিকরণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান ওয়াহিদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রথম অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক শতকরা ৯ ভাগ সুদে প্রথমে ৪৫০ কোটি এবং পরবর্তীতে ৩০০ কোটি টাকা বিভিন্ন তফশিলি ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্পআয়ের ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জনসাধারণকে ছোট আয়তনের ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য ঋণ দেওয়ার একটি প্রকল্প চালু করেছিল।

সে বিষয়টি এবং বর্তমান অস্থিরতা বিবেচনায় নিয়ে আবাসন খাতে ব্যাংক ঋণের সুদের সিঙ্গেল ডিজিটে (১০ শতাংশের নিচে) নামিয়ে আনার দাবি জানানো হয়।

ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এবারের রিহ্যাব মেলায় বিপুল ক্রেতা গৃহায়ণ শিল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে আবাসন খাত সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে পড়েছে।

পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, চলমান অবরোধ-হরতালে রিহ্যাবের প্রায় ১ হাজার ২০০ সদস্যের প্রতিদিন ৩ লাখ টাকা করে লোকসান গুণতে হচ্ছে।

এ হিসাবে আবাসন খাতে ৫ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৭৯২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

“এভাবে চলতে থাকলে আবাসন খাতের ক্ষতি আরও বেড়ে যাবে। এ অবস্থায় আমরা রাজনৈতিক প্রতিবাদের ভাষা পরিবর্তন করার অনুরোধ জানাচ্ছি।”

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে রিহ্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রবিউল হক, সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, কোচেয়ারম্যান কামাল মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।