ব্যাংকের মাধ্যমে আইপিও আবেদন আর নয়

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য আবেদনের সুযোগ আর থাকছে না।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2015, 03:13 PM
Updated : 27 Jan 2015, 03:47 PM

১ এপ্রিল থেকে শুধু ডিপি তথা ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

মঙ্গলবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় আইপিওর আবেদন পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে আইপিও আবেদন করার সুযোগ থাকবে না।

“ফলে আবেদন জমা দেওয়ার তারিখ থেকে রিফান্ড ওয়ারেন্ট বিতরণ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সময়সীমা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।”

বিএসইসির এই সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগকারীদের আইপিও আবেদনের জন্য ব্যাংকের শাখাগুলোতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আবেদন করতে হবে না। ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে আইপিওর জন্য আবেদন করতে হবে।

বর্তমানে নির্ধারিত ব্যাংক ও ডিপির যে কোনো একটিতে আইপিওর আবেদন ও টাকা জমা দেওয়া যায়। ডিপির মাধ্যমে আবেদনের বিষয়টি অবশ্য পাইলট প্রকল্পের আওতায় চলছে। এটিই আগামী মাস থেকে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।

গত ২৮ অক্টোবর হামিদ ফেব্রিকসের আইপিওর মাধ্যমে নতুন প্রক্রিয়ার পাইলট প্রজেক্ট শুরু হয়। সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ায় আগামী এপ্রিল মাস থেকে সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে নতুন প্রক্রিয়ায় আইপিওর আবেদন জমা নেওয়া হবে।

এর আগে বিএসইসি নতুন প্রক্রিয়ায় আইপিও আবেদন গ্রহণেচ্ছুদের এবং যেসব হাউজের সফটওয়্যার হালনাগাদ আছে তাদের মাধ্যমে আবেদন জমা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলক কর্মসূচি চালুর জন্য গত ১৯ আগস্ট ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশনকে (বিএমবিএ) চিঠি দেয় বিএসইসি।

পরে এসব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন পদ্ধতিতে আইপিওর আবেদন জমা নেওয়ার কিছু নির্দেশনা দেয় বিএসইসি।

ওই নির্দেশনার অলোকেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় মঙ্গলবারের সভায় চূড়ান্তভাবে নতুন প্রক্রিয়ায় আইপিও আবেদন জমা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

মঙ্গলবারের সভায় সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৩ প্রতিষ্ঠানকে ৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।

প্রতিষ্ঠান ৩টি হচ্ছে- ইউনাইটেড ফিন্যান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানি, সাউথ এশিয়া সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং এ এ রসায়ন শিল্প লিমিটেড।

ইউনাইটেড ফিন্যান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানিকে ৩টি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৫ লাখ টকা জরিমানা করেছে কমিশন। প্রতিষ্ঠানটি ডিলার অ্যাকাউন্টে ২০০৮-০৯, ২০০৯-১০ এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরে কোনো লেনদেন করেনি এবং কোম্পানির পরিচালককে মার্জিন ঋণ সুবিধা দিয়েছে।

এছাড়া ৩০ জুন ২০১৩ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কনসুলেটেড কাস্টমার অ্যাকাউন্টে পরিশোধযোগ্য ক্লায়েন্টদের পর্যাপ্ত তহবিল থেকে ২০ লাখ টাকা দিয়ে জেনারেটর কিনে। এতে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

সাউথ এশিয়া সিকিউরিটিজ লিমিটেডকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে কমিশন।

প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য বা প্রধান নির্বিাহী কর্মকর্তা ছাড়া প্রধান আর্থিক কর্মকর্তাকে (সিএফও) কমপ্লায়েন্স অথরিটি হিসাবে নিয়োগ দিয়ে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে মার্জিন ঋণ প্রদান ও মার্জিন ঋণের চুক্তি ছাড়া ক্যাশ হিসাবে ঋণ দিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।

নিজ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার ছাড়া পুঁজি উত্তোলন করে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করায় এ এ রসায়ন শিল্প লিমিটেডকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।