শনিবার রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনে সংগঠনটির এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে মন্ত্রী বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৩৬ শতাংশ সরকারি এবং ৭ শতাংশ বেসরকারি শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংগঠন চালু আছে। অথচ তারা বাংলাদেশে বাণিজ্যিক সুবিধা দেওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে শতভাগ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন চালুর প্রস্তাব দিচ্ছে।”
পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশকে শীর্ষ দেশে উন্নীত করতে সরকার পরিকল্পনা মতো কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন তোফায়েল আহমেদ।
“আমরা প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যে কোনো মূল্যে দেশের পোশাকখাতকে বিশ্বের এক নম্বর পর্যায়ে নিয়ে যাব,” বলেন তিনি।
রানা প্লাজা ধসের কারণে বিশ্বব্যাপী দেশের পোশাক কারখানা নিয়ে ব্যাপক নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, “ইতোমধ্যেই আমরা বিদেশিদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, রানা প্লাজা বাংলাদেশের পোশাকখাতের সামগ্রিক চিত্র নয়।”
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী অ্যাপারেল সামিটের প্রাপ্তি তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিজিএমইএ।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কারখানার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে সামিট উপলক্ষে বিদেশি ক্রেতাদের হেলিকপ্টারে করে ঘুরিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের কারখানার পরিবেশ দেখানো হয়ছে।
“রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ছিল আমাদের জন্য সতর্ক বার্তা। এরপর থেকে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি যাতে এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।”
বিদেশি ক্রেতাদের প্রতি পোশাকের দাম বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ঢাকা অ্যাপারেল সামিট-২০১৪ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিজিএমইএ’র উদ্যোগে দেশের তৈরি পোশক নিয়ে প্রথম সামিট এটি।
সংবাদ সম্মেলনে সামিটের প্রাপ্তি তুলে ধরেন বিজিএমইএ’র সভাপতি আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধানখাত তৈরি পোশাক। সর্বশেষ অর্থবছরে এইখাত থেকে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০তম বর্ষে রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে এ ধরনের সম্মেলনের আয়োজন।
“সামিটের মাধ্যমে পশ্চিমা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা আমাদের শিল্পের প্রকৃত দিকগুলো জানতে পেরেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ১৫ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল থেকে ৮৫ জনেরও বেশি বিশিষ্টজন বাংলাদেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে তাদের মতামত দিয়েছেন।”
তিন দিনের সম্মেলনে নয়টি সেশনে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা হয়, যাতে বিদেশি ক্রেতা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত তুলে ধরেন বলে জানান আতিকুল ইসলাম।
বিজিএমইএ’র অন্যতম সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি, রিয়াজ বিন মাহমুদ, সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক, মারুফ রহমান, সাবেক সহ-সভাপতি ফজলুল আজিম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।