ফিলিপিন্সও চাল কিনতে চায়

বাংলাদেশ থেকে চাল ও আলু আমদানি করতে চায় ফিলিপিন্স।

আবদুর রহিম হারমাছি ফিলিপিন্স (ম্যানিলা) থেকে, প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2014, 02:06 PM
Updated : 25 Nov 2014, 05:09 PM

দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আমান্ডো  এম তাতাগগো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানের সঙ্গে বৈঠকে এই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

ম্যানিলায় গভর্নর ভবনে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানের বৈঠক হয়।

বৈঠকে ফিলিপিন্সের গভর্নর তাতাগগো বলেন, “বাংলাদেশ চাহিদার চেয়েও অনেক বেশি চাল উৎপাদন করছে। আমাদের প্রচুর চাল আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশ থেকে আমরা চাল আমদানি করতে চাই।”

বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আলু কিনতেও আগ্রহের কথা জানান ফিলিপিন্স কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন তাতাগগো।

জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কায় চাল রপ্তানির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। শ্রীলঙ্কার মতো ফিলিপিন্সেও আমাদের সেদ্ধ চাল রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।”

এ ব্যাপারে দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ফিলিপিন্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গোমেজ বলেন, “আগামী মাসে বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল ম্যানিলা আসবে। তখন চাল এবং আলু রপ্তানির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তারপর দুই দেশের সরকারের মধ্যে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করা যেতে পারে।”

প্রতি মেট্রিক টন ৪৫০ ডলার দরে শ্রীলঙ্কায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল রপ্তানির চূড়ান্ত অনুমতি দিয়েছে সরকার।

গত ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইতিমধ্যে সেই চাল রপ্তানির প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ প্রতি বছর স্বল্প পরিমাণে সুগন্ধি চাল রপ্তানি করলেও সরকারিভাবে বড় পরিসরে সিদ্ধ চাল রপ্তানি এই প্রথম।

বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন বেশি।

তাছাড়া দেশের বাজারেও চালের দাম এখন স্থিতিশীল।

আন্তর্জাতিক ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট- ইরির ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, ফিলিপিন্স পৃথিবীর সবচে বেশি চাল আমদানিকারক দেশ। যদিও ধান উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় অবস্থান অষ্টম। উৎপাদন দেড় কোটি টনের কিছু বেশি।

আয়তনে ফিলিপিন্স বাংলাদেশের প্রায় দ্বিগুণ হলেও জনসংখ্যা ১০ কোটির মতো। সাত হাজার ১০০ দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ফিলিপিন্সে বিশ্বের সবচে বড় ধান গবেষণা সংস্থা-ইরির অবস্থান।

ষাটের দশকে সবুজ বিপ্লবের সূতিকাগার ফিলিপিন্সে আধুনিক চাষাবাদ এবং গবেষণার ফলে একর প্রতি ধানের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। তবে চাহিদা আর উৎপাদনের ফারাকও বেড়েছে।

গুসি শান্তি পদক দেওয়া হবে বুধবার

গুসি শান্তি পদক নিতে ম্যানিলায় এসেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান।

বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ম্যানিলা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আতিউর রহমানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ১৫ জনের হাতে এই পদক তুলে দেওয়া হবে।

দারিদ্র্য কমিয়ে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য তাদের সম্মানিত করছে গুসি পীস প্রাইজ ফাউন্ডেশন।

পদক প্রদানের আগে অবশ্য পদকজয়ীদের নানাভাবে সম্মানিত করার চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না ম্যানিলাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি।

মঙ্গলবার সকালে ফিলিপিন্সের জাতীয় বীর জোসে রিজালের নামে প্রতিষ্ঠিত রিজাল পার্কে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান পদক জয়ীরা। ১৯৪৬ সালে আমেরিকার কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল এই পার্কে।

রিজাল পার্ক থেকে পদক জয়ীদের নেওয়া হয় ফিলিপিন্স জাতীয় প্রেসক্লাবে। স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের মুখোমুখি হয়ে অনুভূতির কথা জানান তারা।

বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যার যার অবস্থানে থেকে ভূমিকা পালনে অতীতের মতোই সচেষ্ট থাকবেন বলে ঘোষণা দেন সবাই।