পুনঃতফসিলকৃত ঋণও খেলাপি হয়ে পড়ছে

রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতি বিবেচনায় পুনঃতফসিলের সুযোগ পাওয়া মন্দ ঋণগুলো আবারও খেলাপি হয়ে পড়ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2014, 03:53 PM
Updated : 16 Nov 2014, 04:45 PM

একারণে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের মোট পরিমাণও বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসেব মতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ২৯০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, যা ব্যাংকিং খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ।

এর আগে এপ্রিল-জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫১ হাজার ৩৪৪ কোটি ৬৩ লাখ, যা ওইসময়ের বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এই হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের চেয়ে পাঁচ হাজার ৯৪৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কয়েকটি কারণে খেলাপি ঋণ বেশি দেখা যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ খেলাপি ঋণের নতুন হিসাব পদ্ধতি।

“এছাড়া রাজনৈতিক কারণে যেসব ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, সেসব ঋণের কিছু আবারও সাব স্টান্ডার্ড হয়ে গেছে। তবে সাব স্টান্ডার্ড লোনকে পুরোপুরি খেলাপি বলা যাবে না। কারণ আরও তিন মাস এসব ঋণের প্রতিষ্ঠান খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে না।”

খেলাপি ঋণের তিনটি পর‌্যায় রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের খেলাপি ঋণকে সাব স্টান্ডার্ড, মাঝারি স্তরকে ডাউটফুল এবং চূড়ান্ত স্তরকে ব্যাড বা লস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

বর্তমান মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা সাব স্টান্ডার্ড পর‌্যায়ের ঋণ বলে ডেপুটি গভর্নর জানান।

২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য কিছু শর্ত শিথিল করে কেস-টু-কেস বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ডাউন পেমেন্ট (এককালীন জমা) শিথিল করে সেগুলোর ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। তিন মাসে ব্যাংক চারটির মোট খেলাপি ঋণ বেড়েছে এক হাজার ৭৮ কোটি টাকা।

বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণ তিন হাজার কোটি বেড়ে ২২ হাজার ১৯৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বিদেশি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২১৬ কোটি টাকা।

আর বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ হয়েছে ১২ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ১১ হাজার ৫১ কোটি টাকা।