আমেরিকায়ও কদর প্রাণের মুড়ি-চালের

প্রাণের মুড়ি ও পোলাও চালের বেশ কদর আমেরিকায়।

আবদুর রহিম হারমাছি নিউইয়র্ক থেকে ফিরেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2014, 05:38 PM
Updated : 12 Nov 2014, 05:38 PM

মূলত নিউ ইয়র্ক শহরই বড় বাজার। এছাড়া শিকাগো, ভার্জিনিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি ও ক্যালির্ফোনিয়াতেও এই দুটি পণ্যসহ প্রাণ-আরএফএলের পণ্য চলছে।

আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দক্ষিণ এশিয়ার লোকজন প্রাণ পণ্যের প্রধান ভোক্তা। এছাড়া স্থানীয় জনগণের কাছেও প্রাণের পণ্য ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণ-আরএফএলের কান্ট্রি ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন।

নিউ ইয়র্ক শহরের বড় বড় শপিং মল, ছোট বিপণীবিতানসহ সবখানেই এখন মিলছে প্রাণের জুস, চকলেট, বিস্কুটসহ ২০টির মতো পণ্য। তবে বেশি বিক্রি হয় চিনিগুঁড়া চাল (পোলাও চাল) ও মুড়ি।

খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান প্রাণ ২০১০ সাল থেকে আমেরিকায় পণ্য রপ্তানি শুরু করে। প্রথম বছর রপ্তানির পরিমাণ ১০ কোটি টাকা থাকলেও গেল বছর তা ১৬ কোটিতে পৌঁছেছে।

এ বছর রপ্তানি ৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

“আগামী পাঁচ বছরে আমেরিকায় প্রাণের রপ্তানি পাঁচশ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা বাজার সম্প্রসারণ করছি। আশা করছি সফল হব,” বলেন তিনি।
নিউ ইয়র্কে প্রাণ কার্যালয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আগে নিউ ইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি স্টেটে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রাণের পণ্য কিনত। এখন দক্ষিণ এশিয়া এবং স্থানীয় লোকজনও প্রাণের পণ্য কিনছেন।”

পোলাও চাল ও মুড়ি বেশি বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

নিউ ইয়র্ক শহরের ৭০ স্কট এভিনিউ’র ব্রুকলিন শিল্প এলাকায় দশ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে প্রাণের কার্যালয়। একটি বড় ‘ওয়্যার হাউজ’ও রয়েছে ওই কার্যালয়ে। সেখানেই প্রাণের বিভিন্ন ধরনের পণ্য সাজানো রয়েছে।

চিনিগুঁড়া চাল থেকে শুরু করে মুড়ি, মরিচের গুঁড়া, ক্যান্ডি চকলেট, টোস্ট বিস্কুট, ড্রাই কেক, নানা ধরনের জুস ভর্তি করে রাখা হয়েছে ওই ওয়্যার হাউজে। আছে আরএফএলের গৃহস্থালী সামগ্রী- বালতি, মগ-গামলা।

প্রাণের নিউ ইয়র্ক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (পরিচালনা) শহীদুল আনাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ থেকে সমুদ্র পথে প্রাণের পণ্য

বন্দরে আসে। সেখান থেকে পণ্যগুলো এনে ওয়্যার হাউজে রাখা হয়।

“এরপর এই পণ্যগুলো নিউ ইয়র্কসহ অন্যান্য স্টেটে পাঠানো হয়।”

তিনি জানান, দ্রুত পণ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য দশটির মত গাড়ি রয়েছে তাদের। সব মিলিয়ে ৩০ জনের মত লোক কাজ করছেন।

বাজার সম্প্রসারণের ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আগামী পাঁচ বছরে আমাদের জনবল কয়েক গুণ বাড়ানো হবে। বাড়ানো হবে গাড়ি।

“আর ৩০/৪০ কোটি টাকার বাজার চার-পাঁচশ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।”

প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছাড়াও আমেরিকানারও প্রাণে কাজ করেন বলে জানান তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণের হলুদ রপ্তানি নিয়ে যে সমস্যা হয়েছিল সেটা এখন আর নেই। আমাদের পণ্য তালিকা থেকে হলুদ বাদ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সব পণ্যই এখন কয়েক ধাপে পরীক্ষার পর বাজারে ছাড়া হয়।”

বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে নিউ ইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন।

প্রাণ-আরএফএল বাংলাদেশের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বর্তমানে প্রাণ যুক্তরাষ্টসহ ১০৮টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে।

“আমেরিকায় প্রাণের পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি উত্তর আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ ও কানাডায় রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য নিউ ইয়র্কে আরও একটি বড় ওয়্যার হাউজ স্থাপন করা হবে।”