বুধবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বিবেক সুদ এ তথ্য জানান।
আয়কর দেওয়ার পর এ বছর প্রথম নয় মাসে গ্রামীণফোনের নিট মুনাফা হয়েছে এক হাজার ৫৯২ কোটি টাকা, যেখানে ২০১৩ এর একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল এক হাজার ৭১ কোটি টাকা।
রাজস্ব বৃদ্ধি এবং পরিচলন ব্যয়ে দক্ষতার কারণে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারা মনে করছেন।
অনুষ্ঠানে বিবেক সুদ বলেন, “গ্রামীণফোন উদ্ভাবনী এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা ও পণ্যের মাধ্যমে ৫ কোটি গ্রাহকের বিশাল মাইলফলক অতিক্রমে সক্ষম হয়েছে। আমাদের দেশব্যাপী শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্কও এর পিছনে বিরাট অবদান রেখেছে।
“তীব্র প্রতিযোগিতার পাশাপাশি কিছু প্রতিকূলতার কারণে প্রবৃদ্ধির ধারা কিছুটা ব্যাহত হয়েছ। আগামীতে বাজারের প্রতি আমাদের শ্রেণিভিত্তিক পদ্ধতি এবং মাঠ পর্যায়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণফোনকে তার শেয়ারহোল্ডারদের জন্য আরও লাভজনক করা সম্ভব হবে।”
গ্রামীণফোনের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) দিলিপ পাল বলেন, “গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সেবা থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব বেড়েছে ৫ দশমিক ৮ ভাগ। ডিভাইস ও অন্যান্য খাত থেকে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ২ ভাগ।”
তবে এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এসে প্রবৃদ্ধির হার কমেছে।
প্রধানত ভয়েস, ডাটা ব্যবহার, এসএমএস ও কনটেন্ট সেবা থেকে রাজস্ব বাড়ায় প্রথম নয় মাসে ওই প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানান দিলিপ পাল।
এছাড়া ডিভাইস বিক্রি বৃদ্ধি ও ফিনান্সিয়াল সার্ভিস খাতও প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে বলে জানান তিনি।
চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে ফুটবল বিশ্বকাপ এবং শেষের দিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সেবা থেকে অর্জিত রাজস্বের প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে বলে গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারা মনে করছেন।
চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে গ্রামীণফোন সাড়ে ৪২ লাখ নতুন গ্রাহক সংগ্রহ করেছে, যাতে তাদের মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ২ লাখ ৯০ হাজারে।
টেলিকম শিল্পের আনুমানিক ৭ দশমিক ৩ ভাগ প্রবৃদ্ধির তুলনায় গ্রামীণফোনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ২ ভাগ, ফলে কোম্পানির মার্কেট শেয়ার বেড়েছে।
বর্তমানে গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ২০ ভাগ অর্থাৎ এক কোটি ২ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
এ বছরের প্রথম নয় মাসে ৬৪ জেলায় ৩জি বিস্তার, ২জি বিস্তার ও ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গ্রামীণফোন ৯২৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে কর, ভ্যাট, শুল্ক এবং লাইসেন্স ফি বাবদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৪৬৪৮কোটি টাকা জমা দিয়েছে গ্রামীণফোন, যা কোম্পানির মোট রাজস্বের ৬১ ভাগ।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) অ্যালান বঙ্কেসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।