বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠকে এবিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী প্রতি তিন মাস পরপর এ ধরনের বৈঠক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ও এর বিপরীতে রাখা নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি বেশ খানিকটা বেড়েছে। তাছাড়া এখাতের ব্যাংকগুলোর গত তিন মাসের কাজের মূল্যায়নে সন্তুষ্ট হতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৈঠক শেষে ডেপুটি গর্ভনর আবু হেনা মোহা. রাজি হাসান সাংবাদিকদের বলেন, “বৈঠকে এখাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রভিশন ও মুলধন ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় তা কমিয়ে আনার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে বলা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “খেলাপি ঋণের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে আলাদা বেঞ্চ গঠন করে মামলা পরিচালনা করা যায় কিনা তা বিবেচনার অনুরোধ করা হয়েছে।”
এছাড়া ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা জোরদারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে জুন শেষে এই চার ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা, গত মার্চ শেষে যা ছিল ৩৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সহজ শর্তে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ পেয়ে ব্যাপকভাবে তা কাজে লাগায় এই চার ব্যাংক। এর মধ্যে রূপালী ও জনতা ব্যাংকের পুনঃতফসিল করার পরিমাণ ছিলো অন্যগুলোর চেয়ে বেশি। এরপরও ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে। কোনো কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ অনুসন্ধানে নামার পরিকল্পনাও চলছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত ‘আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন ২০১৩’ তে বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের ৭৯ শতাংশই মন্দ। এর মধ্যে আবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অংশ বেশি।