এর আগে সর্বশেষ ১৭ জুলাই এর চেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছিল ডিএসইতে; সেদিন হাতবদল হয়েছিল ৯৮৭ কোটি টাকার শেয়ার।
ফিনিক্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কাদির চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“ব্যাংকগুলোর সুদের হার কমে গেছে। মানুষ তাই ব্যাংকে টাকা না রেখে বেশি লাভের আশায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছে।”
তাছাড়া অলস টাকা জমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলো সম্প্রতি তাদের আমানতের সুদের হারও কমিয়ে এনেছে।
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, “ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। কল মানি মার্কেটে সুদ হার কম। আবার বাজারে স্থানীয় মুদ্রার যে চাহিদা থাকার কথা- সেটা নেই। এই প্রেক্ষাপটে ঋণের সুদ হার কমাতে হচ্ছে। তাই ব্যাংকগুলো বাধ্য হয়ে আমানতের সুদ হারও কমাচ্ছে।”
এ কাদির চৌধুরী বলেন, “দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে এবং পুঁজিবাজার ছাড়া অন্য কোথাও বিনিয়োগের তেমন সুযোগ নেই। তাই পুঁজিবাজার নতুন বিনিয়োগ আসছে বলেই মনে হচ্ছে।”
লেনদেনের পাশাপাশি বুধবার দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচক বেড়েছে।
ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স মঙ্গলবারের চেয়ে প্রায় ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৭৯৮ পয়েন্ট হয়েছে।
আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএসইএক্স ৮৭ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ৯৫১ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা; হাতবদল হয়েছে ৬১ কোটি টাকার শেয়ার।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ১৩১টির দাম বেড়েছে। কমেছে ১৩৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সে যোগ হয় ৩৪ পয়েন্ট। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৭৩ কোটি টাকার শেয়ার।
সাম্প্রতিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত আড়াই মাস ধরেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক বাড়ছে।
২০১৪ সালের শুরুতে সূচক ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টে ওঠার পর জুনে তা ৪ হাজার ৩০০ পয়েন্টে নেমে আসে। গত আড়াই মাসে তা আবার বেড়ে ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টের ওপরে এসেছে।
২০১০ সালের ৫ জানুয়ারি ডিএসই সাধারণ সূচক ছিল প্রায় ৯ হাজার পয়েন্ট। ব্যাপক ধাসের পর ২০১২ সালের শেষে তা ৪ হাজার ২০০ পয়েন্টে নেমে আসে।
সেই ধস ২০১৩ সালেও অব্যাহত থাকে। ডিএসইর সার্বিক সূচক ৪ হাজা ২৬৬ পয়েন্ট নিয়ে ওই বছর শেষ করে।
২০১০ সালের শেষ দিকে ঢাকায় দৈনিক গড়ে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হলেও পরের বছর তা নেমে আসে ৬৬৪ কোটি টাকায়। ২০১২ সালে দৈনিক গড় লেনদেন আরও কমে ৪২১ কোটি এবং ২০১৩ সালে ৪০০ কোটিতে নেমে আসে।
এ বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার শেয়ারবাজারে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬০০ কোটি টাকার মতো ।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সভাপতি সৈয়দ সাজিদ হোসেন রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১০ সালে বড় ধরনের ধসের পর এ মুহূর্তে দেশের পুঁজিবাজার কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।
“লেনদেন মাঝে মাঝে ভালো হচ্ছে, আবার কমছে, তারপরও বর্তমানে বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে।”