শ্রীলংকায় চাল রপ্তানি করবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ চলতি বছর শ্রীলংকায় ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টন চাল রপ্তানি করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2014, 07:44 AM
Updated : 18 Sept 2014, 09:42 AM

এছাড়া অপ্রচলিত কৃষি পণ্য রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা দেয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ‘চতুর্থ এগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ প্রতি বছর কিছু পরিমাণে সুগন্ধি চাল রপ্তানি করলেও বড় পরিসরে চাল রপ্তানি এর আগে হয়নি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাই কমিশন সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জি টু জি পর্যায়ে (সরকার থেকে সরকার)সিদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব দেয়। কলম্বো বন্দরের মাধ্যমে চাল আমদানি করতে চায় দেশটি। 

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী,গত অগাস্ট পর্যন্ত  সরকারি ভাণ্ডারে ১১ লাখ মেট্রিক টন চালের মজুদ ছিল, যা গত বছরের ওই সময় থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন বেশি।

বাংলাদেশে চালের উৎপাদন ও সরকারি গুদামে মজুদ পর্যালোচনা করে খাদ্য অধিদপ্তর ৫০ হাজার থেকে এক লাখ মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিল।

অবশ্য মোটা চাল রপ্তানি করতে হলে ২০১৪ সালের ১৫ জুন জারি করা একটি ‘এসআরও’ সংশোধন করতে হবে। ওই আদেশে সুগন্ধি চাল ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত রপ্তানি নিষিদ্ধ রয়েছে।

মন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশের কৃষি খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে কৃষি পণ্য নিতে চায়।”

রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে এক লাখ টন আলু নেয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে বলেও জানান তিনি। 

“এর আগে আমরা রাশিয়ায় ২০ হাজার টন আলু রপ্তানিও করেছি। কিন্তু আলুতে ব্যাকটেরিয়া ধরা পড়ায় তারা আপাতত নিচ্ছে না। আমাদের বিজ্ঞানীরা বলেছেন আলুর ব্যাকটেরিয়া সমস্য আগামীতে থাকবে না। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।”  

অপ্রচলিত কৃষি পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তার আশ্বাস দিলেও কোন কোন পণ্য এর আওতায় আসবে, কবে থেকে কি পরিমাণ সহায়তা মিলবে সেসব বিষয়ে অনুষ্ঠানে বিস্তারিত বলেননি তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেন, সরকার কৃষি খাতের উন্নয়নে কাজ করছে। সার বিতরণে সমস্যর সমাধান করা হয়েছে। নতুন নতুন জাতের বিভিন্ন বীজ উৎপাদন, রপ্তানিতে প্রণোদনা ও ব্যাংক ঋণ সহজ করা হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, “কৃষি জমি বাড়ছে না। সুতরাং দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই।”

ভূগর্ভস্থ পানি কম ব্যবহার করে ভূ-উপরিস্থ পানি বেশি ব্যবহারের পরামর্শ দেন কৃষিমন্ত্রী।

“যারা ডিপটিউবলের ব্যবসা করেন তাদের বুঝতে হবে যে পরিবেশের ক্ষতি না করে পানি সরবরাহ করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সচিব নাজমুল ইসলাম। তিনি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও কৃষিতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। 

বীজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিস উদ দৌলাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে দেশি-বিদেশি ২২৫টি স্টলে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি, আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার উপকরণ ও বীজ।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, চীন, তাইওয়ান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকার বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠান এ প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে।