শ্রীলঙ্কায় চাল রপ্তানির উদ্যোগ

খাদ্যে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণতা’ অর্জনের পর মোটা চাল রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2014, 11:47 AM
Updated : 27 August 2014, 11:47 AM

বাংলাদেশ থেকে চাল নিতে শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাওয়ার পরে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাই কমিশন সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জি টু জি পর্যায়ে (সরকার থেকে সরকার) সিদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব দেয়। কলম্বো বন্দরের মাধ্যমে চাল আমদানি করতে চায় দেশটি।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ কথা স্বীকার করে বলেন, “চাল রপ্তানির বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। চাল রপ্তানির সম্ভাবনা আছে।”

শ্রীলঙ্কায় চাল রপ্তানি নিয়ে বাণিজ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পর্যালোচনা করছে বলেও বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডর নিকোলায়েভের সঙ্গে বৈঠকের পর জানান মন্ত্রী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল বলেন, “আমাদের চাল আমদানি করতে হত। এক সময় চুক্তি মোতাবেক চাল না দিয়ে একটি দেশ আটলান্টিক মহাসাগর থেকে চালের জাহাজ ফিরিয়ে নিয়েছিল।

“খাদ্য নিরাপত্তা ও দেশীয় চাহিদা সম্পূর্ণ প্রস্তুত রেখে এবং আপৎকালীন সময়েও যেন খাদ্য সংকট না হয় তা বিবেচনা করেই চাল রপ্তানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”

এদিকে চাল রপ্তানির বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তর খাদ্য মন্ত্রণালয়েকে জানিয়েছে, সরকারি ভাণ্ডারে বর্তমানে ১১ লাখ মেট্রিক টন চালের মজুদ রয়েছে, যা গত বছরের থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন বেশি।

বাংলাদেশে চালের উৎপাদন ও সরকারি গুদামে মজুদ পর্যালোচনা করে খাদ্য অধিদপ্তর ৫০ হাজার থেকে এক লাখ মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রীও আশা করছেন, দেশীয় চাহিদা পূরণ করেই এক লাখ মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা যাবে।

তবে মোটা চাল রপ্তানি করতে হলে ২০১৪ সালের ১৫ জুন জারিকৃত এসআরও  সংশোধন করতে হবে। ওই এসআরও অনুযায়ী, সুগন্ধি চাল ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত রপ্তানি নিষিদ্ধ রয়েছে।

সরকার প্রতি টন চালের গুদাম মূল্য ৪৫৫, টনপ্রতি জাহাজ ভাড়া ৩০, টনপ্রতি ইন্স্যুরেন্স খরচ দুই এবং গুদাম থেকে বন্দর পর্যন্ত পরিবহনে টনপ্রতি ছয় মার্কিন ডলার খরচ ধরে সম্ভাব্য ৪৯৩ মার্কিন ডলার মূল্যে এই সিদ্ধ চাল রপ্তানির বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান।

তোফায়েল-নিকোলায়েভ বৈঠক

রাশিয়ার বাজারে কিভাবে আরো বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি করে বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ করা যায়, সে বিষয়ে রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

রাশিয়ায় রপ্তানি করা আলুতে দুটি রোগ ধরা পড়েছে জানিয়ে তোফায়েল বলেন, বিশেষজ্ঞরা এনিয়ে কাজ করছেন।

“আলু আমদানির জন্য নিজেদের খরচে চট্টগ্রাম বন্দরে রাশিয়া একটি স্টোরেজ করতে চায় বলে রাষ্ট্রদূত আমাকে জানিয়েছেন।”

“আমরা বাজার বহুমুখীকরণ করতে চাইলে রাশিয়ান ফেডারেশনই হবে সব থেকে বড় বাজার,” বলেন মন্ত্রী।

রুশ রাষ্ট্রদূত নিকোলাভ বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।