৪২ বিলিয়ন ডলারের এলসি

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গত অর্থবছরে পণ্য আমদানির জন্য প্রায় ৪২ বিলিয়ন (৪ হাজার ২০০ কোটি) ডলারের এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2014, 04:45 PM
Updated : 17 August 2014, 04:45 PM

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক পণ্য আমদানির যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য আমদানি জন্য মোট ৪ হাজার ১৮২ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছে।

২০১২-১৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩৫ দশমিক ৯৪ লাখ ডলার।

খাতওয়ারি পণ্য আমদানির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত অর্থবছরে চাল আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ বেড়েছে ১০৭৫ শতাংশ। পেঁয়াজ আমদানির এলসি বেড়েছে ৬২ দশমিক ২৯ শতাংশ, ভোজ্যতেলের ৫৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।

শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি) আমদানির এলসি আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়েছে ৩৬ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ৩৬ শতাংশ এই প্রবৃদ্ধি রেকর্ড। এর আগে কখনোই এক বছরে এত বেশি প্রবৃদ্ধি হয়নি।”

তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ৩৮৭ কোটি ৮২ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ১৮৫ কোটি ৪২ লাখ ডলার।

চাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে ৩৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের, আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ১২ লাখ ডলার।

২০১২-১৩ অর্থবছরে পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ১১ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরে তা বেড়ে ১৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার হয়েছে।

ভোজ্য তেল আমদানি ১৪৯ কোটি ৯৩ লাখ ডলার থেকে বেড়ে ১৫৪ কোটি ডলার হয়েছে।

এছাড়া অন্যান্য পণ্যের মধ্যে গম আমদানির এলসি খোলা হয়েছে ৯৫ কোটি ডলার। চিনি ৭৪ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, তুলা ২৪১ কোটি ৮১ লাখ ডলার, তৈরি পোশাক খাতের কাপড় এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য পণ্য ৫৭৬ কোটি ডলার, ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল ৪৬ কোটি ডলার এবং প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের জ্বালানি তেল আমদারি এলসি খোলা হয়েছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরে বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানির জন্য মোট ৩৭ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। ২০১০-১১ অর্থবছরে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৩৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগের বছরের ধারাবাহিকতায় গত অর্থবছরের প্রথম কয়েক মাসে আমদানিতে ছিল ধীরগতি।

“৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি ফিরে এসেছে। সে কারণে ক্যাপিটাল মেশিনারি, চালসহ অন্যান্য পণ্যের আমদানিও বাড়ছে।”

অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।