এবার প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে প্রায় ২৭০০ কোটি ডলার আসবে বলে ধরা হয়েছে।
সোমবার কারওয়ান বাজারে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে (ইপিবি)এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন।
এর আগে মন্ত্রী তৈরি পোশাক শিল্পের প্রধান দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএসহ অন্যান্য খাতের প্রতিনিধি, অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং ইপিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে লক্ষ্যমাত্রা চূড়ান্ত করেন।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে উভেন পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩৬৮ কোটি ডলার, যা ২০১৩-১৪ অর্থবছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি।
নিট পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩২২ কোটি ডলার; এতে প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
গত অর্থবছর তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ২৪৪৯ কোটি ডলার, যা মোট রপ্তানি আয়ের ৮১ শতাংশ।
এর মধ্যে নিট পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১২০৪ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। আর উভেন পণ্যে রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১২৪৪ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এবার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৩ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ৫০ লাখ ডলার; প্রবৃদ্ধি ২৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
হিমায়িত মাছ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৩ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ১৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।
জুতা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি।
কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৭কোটি ৬ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি।
প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ৫ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি।
ওষুধ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৩ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি।
আসবাবপত্র রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি।
হোম টেক্সটাইল রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৫কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা সত্ত্বেও গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় সমান রপ্তানি আয় দেশে এসেছে।
“মজার ব্যাপার হচ্ছে, জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করার পরও যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বেড়েছে।”
পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫৮ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৫০ কোটি ডলার।
বাণিজ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বস্ত্র খাতের রপ্তানি ৫০০ কোটি ডলার অতিক্রম করবে ।
গত অর্থবছর পণ্য রপ্তানি থেকে প্রথমবারের মতো ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি আয় করে বাংলাদেশ।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট ৩০১৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি।
গত অর্থবছর রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩০০৫ কোটি ডলার।
এর আগে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৮০০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানি থেকে ২৭ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার আয় করে।