শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মলগুলোতে ঘুরে সব বয়সী মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী ২৯ বা ৩০ জুলাই রোজার ঈদ। ঈদের আগে ২৫ জুলাই শেষ শুক্রবার হাতে থাকলেও ২৪ জুলাই থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করবেন নগরবাসী।
অন্যদিন ইফতারের পর থেকে ভিড় বাড়তে শুরু করলেও শুক্রবার বেলা ১২টার পর থেকেই রাজধানীর শপিং মলগুলোতে হাজারো মানুষের ভিড় দেখা যায়।
ক্রেতারা হাতখুলে কেনাকাটা করলেও বরাবরের মতোই খানিকটা বেশি দাম নেয়ার অভিযোগ ছিলো বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে।
তবে ব্র্যান্ড শপগুলোতে দরকষাকষির ঝামেলা বা বেশি দাম চাওয়ার অভিযোগ নেই।
রাজধানীর শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাদনী চক, বসুন্ধরা শপিংমল, শান্তিনগর টুইন টাওয়ার, বেইলি রোড, মগবাজার আড়ং, মৌচাক, ইস্কাটনসহ বিভিন্ন এলাকার বিপণীবিতানগুলো ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সকাল ১০টা-সাড়ে ১০টার মধ্যে বিক্রি শুরু হয় জানিয়ে এলিফ্যান্ট রোডের এক দোকানি বলেন, “রাত ১টার পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকছে। এখন কেনাবেচা মোটামুটি, দু’এক দিনের মধ্যে বিক্রি আরো বাড়বে।”
গাউছিয়া মার্কেটের একটি দোকানে পোশাক দেখানোর আগেই ‘এক দাম’ বলে দিচ্ছিলেন বিক্রেতা। ক্রেতারাও দামাদামি না করেই তা কিনছিলেন।
এই দোকানের বিক্রেতা আশীষ কুমার বলেন, “অনেক ভিড়ের জন্যই এটা করতে হচ্ছে, এতে সবারই সময় বাঁচে। তবে অনেকে একদামে কেনাকাটা করতে চান না।”
নিউ মার্কেটে শিশু পণ্যের দোকানি সোহেল রানা রোজায় বিক্রি নিয়ে বলেন, “কয়েকদিন ধরে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিক্রি চলছে। কিন্তু বেচাকেনা এখনো ততোটা জমেনি।”
নিউমার্কেটে নাসরিন আক্তার নামের এক গৃহিণী বলেন, “চাহিদা মতো জিনিস পাওয়া গেলেও দাম একটু বেশি নেয়া হচ্ছে।
“তিন মাস আগে পাঁচ বছরের ছেলের জন্য যে টি-শার্ট তিনশ টাকা দিয়ে কিনেছি আজ তা সাড়ে চারশ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। ঈদের আগে বাচ্চার নতুন পোশাক না কিনেও তো উপায় নেই।”
খিলগাঁও থেকে আসা আমিনুর রহমানের অভিযোগ, “ঈদে নতুন ডিজাইনের কোনো পোশাক বাজারে আসেনি, সবই গতানুগতিক। আবার দামের বেলায়ও বেশি।”
ওই মার্কেটের দ্বিতীয় তলার একটি ব্র্যান্ড শপের ম্যানেজার রাশেদুল আলম নাঈম বলেন, “বেচাকেনা এখনো জমেনি। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে জমবে। গতবছর রোজার এই সময়ে দিনে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা কেনাবেচা হতো, এখন তার অর্ধেক হচ্ছে।”
মৌচাক মার্কেটের একটি শাড়ির দোকানের বিক্রেতা সজিব হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অন্য ঈদগুলোতে এই দিনে এতোক্ষণে (বিকাল ৪টা পর্যন্ত) প্রায় এক লাখ টাকা বিক্রি হতো। এবার ত্রিশ হাজার ‘ক্রস’ করেনি।”
তাদের প্রতিটি শাড়ির দোকানেই একই অবস্থা বলে জানান এই দোকানি।
জুয়েলারি ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান সুমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদ উপলক্ষে স্বর্ণের বিক্রি তেমন একটা নাই। আর রূপার বেচাবিক্রি চার ভাগের একভাগ।”
আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নুরুল আমিন বলেন, “এবার ঈদ পড়তেছে মাসের মুখে মুখে। তাই আগের মাসের বেতন আগেই পেয়ে গেছে। পরের মাসের বেতন পাবে ঈদের পর। ক্রেতাদের এখানে কম আসার এটাও একটা কারণ।”
ঈদ উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘর, বেইলি রোডসহ কয়েকটি স্থানে তাঁতবস্ত্র মেলায় বসেছে। এসব মেলায় জামদানি ও তাঁতের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব অস্থায়ী মেলা চলবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।