রানা প্লাজা ধসের বছরপূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।
মেনেন্দেজ বলেন, “এক বছর আগে এই সপ্তাহে রানা প্লাজা ধসে ১১৩০ জন বাংলাদেশি পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু বিশ্ব বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।”
পরের এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র, আইএলও ও বিদেশি ক্রেতারা কারখানার নিরাপত্তায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও ‘দেশের ভেতরে পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্টদের অনেকেই বছরটি গতানুগতিকভাবেই কাটিয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ডেমক্রেট দলীয় এই সিনেটর বলেন, “প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের অনেক কারখানার মালিক তাদের কারখানায় শ্রমিকদের ইউনিয়ন গঠনে বাধা দিচ্ছেন। তারা ইউনিয়ন নেতাদের ছাঁটাই করছেন, এমনকি কারখানার ব্যবস্থাপকদের কেউ কেউ ইউনিয়ন সংগঠকদের ওপর ভয়াবহ হামলার সঙ্গে যুক্ত।”
সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির চেয়ারম্যান মেনেন্দেজ বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ আগের মতোই কারখানা মালিকদের রক্ষাকর্তা হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছে।”
সংগঠনটি শ্রমিক ইউনিয়ন বিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতেও আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, “নতুন ইউনিয়নের নিবন্ধনে বাংলাদেশ সরকার অগ্রগতি করলেও এখনো প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি ও তাদের (শ্রমিকদের) রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।”
এর ফলে দেশে শ্রমিক সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দাবি করে এই সিনেটর বলেন, “অনেক শ্রমিক চাকরি যাওয়ার ভয়ে ইউনিয়নে যোগ দিচ্ছে না এবং সঙ্গত কারণেই ইউনিয়ন সংগঠকরাও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ে আছে।”
মেনেন্দেজ বলেন, “রানা প্লাজা ধসের পর শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়ার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের বাণিজ্য সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে।
“আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বাংলাদেশের কারখানাগুলোর জন্য এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, কারখানা পরিদর্শন সমন্বয় করছে এবং ভবন ধসে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। এছাড়া ভবন ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।”
কারখানায় ‘স্বাধীন ইউনিয়নের শক্তিশালী কণ্ঠ’ ছাড়া নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের অন্য কোনো উপায় নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিজিএমইএ ও সরকার যদি ইউনিয়ন গঠনে দমন-পীড়ন বন্ধের জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ না নেয় তাহলে দেশের পোশাক খাতে রানা প্লাজার মতো আরেকটি দুর্ঘটনা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
“তখন ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ইমেজ নষ্ট হলে তা পুনরুদ্ধারের বাইরে চলে যাবে।”
সবশেষে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে তিনি বলেন, “বিজিএমইএ ও সরকারকে বুঝতে হবে, বাংলাদেশি শ্রমিকদের রক্তের দাগ লেগে থাকা পোশাক পশ্চিমা ক্রেতারা আর কিনবে না।”