বিনিয়োগের সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত নেয়ায় বাংলাদেশের বিষয়ে তাদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে ভারতীয় পত্রিকা মিন্টকে জানিয়েছেন কোম্পানির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী বনমালী আগরওয়ালা।
মিন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্যাসের অভাবে ভারতে মোট নয় হাজার ৩২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প স্থবির হয়ে আছে। তাই বিদ্যুতের ব্যবসার জন্য গ্যাসসমৃদ্ধ বাংলাদেশকেই পছন্দের গন্তব্য হিসেবে দেখছে কোম্পানিটি।
আগরওয়ালা মিন্টকে বলেন, “আমাদের এই অঞ্চলে আমরা বাংলাদেশে ব্যবসা চালু রাখতে পারি। তাদের গ্যাস থাকায় তারা এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রেক্ষিতে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নতুন করে গ্যাসভিত্তিক বিদুৎ প্রকল্প নিয়ে আমাদের কর্মকাণ্ড চলছে।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ১৩৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উল্লেখযোগ্য মজুদ আছে। ১০ হাজার ২৬৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্প ছাড়াও আগামী পাঁচ বছরে দেশটির মোট ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
শ্লথ প্রবৃদ্ধি, ঋণের চড়া সুদ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনে বিলম্বের কারণে ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রসহ অনেক প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে ঋণদাতা ও বিক্রেতাদের অর্থ পরিশোধের ক্ষমতা হারাচ্ছে উদ্যোক্তারা।
ভারতের দুই লাখ ৩৭ হাজার ৭৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতার মধ্যে ২১ হাজার ৩৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে। এই সমস্ত বিদ্যুৎ প্রকল্পের অন্তত ৭০ শতাংশ উৎপাদনক্ষমতা কাজে লাগাতে হলেও প্রতিদিন ৭১ দশমিক ৭ মান ঘনফুট মিটার গ্যাসের প্রয়োজন হয়। অথচ ভারতের মোট গ্যাস সরবরাহই তার চেয়ে অনেক কম।
এর বাইরে নির্বাচনের কারণে বিভিন্ন রাজ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব স্থগিত থাকায় অস্বস্তিতে আছে কোম্পানিটি।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে অন্ধ্র প্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড, কর্ণাটক, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব স্থগিত রয়েছে।
ইউএসবি গ্লোবাল ইক্যুইটি রিসার্চের গত ৩ এপ্রিলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “আমাদের ধারণা, আরো অনেকগুলো রাজ্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণার জন্য নির্বাচন শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এটা বাস্তবায়িত হলে তা রাজ্যের বিদ্যুৎ বোর্ডের জন্য ভাল হবে এবং তাতে বিদ্যুৎ খাতও লাভবান হবে।”
সিদ্ধান্তগ্রহণে দ্রুততা ও নীতির বিষয়ে স্বচ্ছতা আনতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জেনারেল ইলেক্ট্রিক।
বিষয়টি চলমান লোকসভা নির্বাচনেও গুরুত্ব পেয়েছে। বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছে, “কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার ‘কর সন্ত্রাস’ ও ‘অনিশ্চয়তা’ চাপিয়ে দিয়েছে। এটা ব্যবসায়ী শ্রেণির মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করা ও বিনিয়োগ পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলা ছাড়াও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।”