ঢাকার পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়। অধিকাংশ সব্জি প্রতি কেজির দাম এখন ৫০ টাকার বেশি। কমেনি চালের দামও, গরিবের মোটা চালের কেজিও এখন ৫০-এর কাছাকাছি।
শুক্রবার ঢাকার মিরপুর এলাকার কয়েকটি কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি করলা ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা যায়।
নিত্যপণ্যের বাজারের এই পরিস্থিতিতে তিনবেলা পেট পুরে খাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা বললেন একজন দারোয়ান।
মিরপুর এলাকার একটি বাড়ির নিরাপত্তায় নিয়োজিত কাশেমের মাসিক বেতন আট হাজার টাকা।
শুক্রবার দুপুরে মিরপুর ১ নম্বর বাজারে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শাক-সবজির এত দাম হলে গরিব মানুষের পেটে তিনবেলা খাবার জুটবে না। সব জিনিসের দাম একটু একটু করে বাড়ছে।
“আগে ৩০ টাকায় যে করলা পাওয়া যেত সেটা এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকায়ও মিলছে না। অন্যান্য সবজিরও একই অবস্থা। তাহলে মানুষ কী খেয়ে বাঁচবে?”
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে কেনাকাট করতে এসে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শাক-সবজির দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যাওয়া মোটেও স্বাভাবিক নয়। সরকারের উচিত এদিকে দৃষ্টি দেওয়া।
“বিশেষ করে পেঁয়াজের বাজারে বড় ধরনের কারসাজি চলছে। ভারতে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ক্ষতি হলেও বাংলাদেশে তা হয়নি। তবুও দাম বৃদ্ধির হার ভারতের চেয়েও বেশি।”
পেঁয়াজের রপ্তানিকারক দেশ ভারতে কয়েক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ১২ রুপি থেকে বেড়ে ২৫ রুপিতে পৌঁছেছে। সে কারণে দেশে পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে বলে ঢাকার অন্যতম পাইকারি বাজার শ্যামবাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী দাবি করেছেন।
মিরপুর-১ নম্বর কাঁচাবাজারের পাইকারি দোকান ‘মা বাণিজ্য বিতানের’ দোকানি পলাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখন ভারতীয় এলসির পেঁয়াজও ৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর দেশি পেঁয়াজ একটা ৫২ টাকা, আরেকটা ৫৪ টাকা করে চলছে।
দাম এত বাড়ল কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এগুলো বড় বড় ব্যবসায়ী ও সরকারের চিন্তার বিষয়। আমরা যেই দামে কিনি তার সঙ্গে ২-৪ টাকা ব্যবসা করে মাল ছেড়ে দিই।”
চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর খবরে অল্প কিছু দিন দাম সামান্য কমলেও আবার তা বাড়তির দিকে। মিনিটেকসহ অন্যান্য সরু চালের দাম বস্তায় ২৫ টাকা করে বাড়াচ্ছেন মিল মালিকরা।
মিরপুরে চালের পাইকারি দোকান ‘আলিফ এন্টারপ্রাইজের’ ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, রশিদ, ডলফিন, গ্রামীণ, বিশ্বাস, গোল্ডেনসহ আরও কয়েকটি কোম্পানির পক্ষ থেকে মিনিকেট চালের দাম বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে। তবে নতুন চালান না আসায় দাম এখনও বাড়াননি তিনি।
পাইকারি বাজারে মিনিকেটের বস্তা (৫০ কেজি) ২৬৫০ টাকা, বিআর ২৮ এর বস্তা ২৩০০ থেকে ২৩৫০ টাকা, পাইজাম বস্তা ২১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান রফিকুল।
খুচরায় কেজি প্রতি মিনিকেট ৫৬ থেকে ৬০, নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মোটা চালের দাম আছে কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।