হঠাৎ এই দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বন্যায় আড়তে পেঁয়াজ নষ্ট হওয়া, সামনে কোরবানির ঈদ এবং ভারতীয় বাজারে দাম বৃদ্ধির কথা বলেছেন ব্যবসায়ীরা।
রোববার ঢাকার বিভিন্ন বাজার ও মুদি দোকানে দেশী পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ১০ থেকে ১৩ টাকা বাড়ার কথা জানিয়েছে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবিও।
মিরপুরে আল মদিনা স্টোরের বিক্রয়কর্মী অভি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পাইকাররা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বেশি দামে কেনা পড়ায় ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তারা।
ঢাকায় পেঁয়াজের প্রধান পাইকারি বাজার পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে রোববার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রি হয়।
ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার খবরে দেশের সরবরাহকারীরাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ভারতীয় পেঁয়াজের আমাদানিও কমে গেছে। সেই সুযোগে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
ভারতীয় পেঁয়াজের ব্যাপক চাহিদার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজ (রোববার) সন্ধ্যা পর্যন্ত দুইশ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। এর মধ্যে দেড়শ বস্তাই ভারতীয় এলসির পেঁয়াজ।”
পেঁয়াজের আকস্মিক দাম বৃদ্ধির কারণ হিসাবে একই কথা বলেন শ্যামবাজারের আরেক পাইকারি দোকান আমানত ভাণ্ডারের ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক খান।
তিনি বলেন, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও পাবনা থেকে সারা দেশে পেঁয়াজ সরবরাহ করা হয়। ভারতীয় পেঁয়াজের বাজার চাঙ্গা হওয়ার খবরে এসব এলাকায়ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মহারাষ্ট্রে, সেখানে সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ রুপির মতো বেড়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর। টমেটো ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে দিল্লির বাজারে তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
সারা দেশে পেঁয়াজের অন্যতম যোগানদাতা ফরিদপুরে এদিন পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ টাকা।
ফরিদপুর সদরের অন্যতম শস্যহাট কানাইপুরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন মাতবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইন্ডিয়ান পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ার সুযোগে দেশীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।”
কানাইপুর হাটের ইজারাদার সেলিম মাতবর বলেন, “ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার কারণে দেশের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পান না। ফলে সারা বছর তারা বঞ্চিত হন। মওসুমে প্রতি কেজি ৭/৮ টাকা করেও পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয় কৃষকদের।
“ফরিদপুরের বাজারগুলোতে এখন ১২০০ টাকায় এক মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকরা সাময়িকভাবে লাভবান হচ্ছেন।”