বহু প্রতীক্ষিত এই এমএনপি সেবা শিগগিরই শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।
সোমবার বিকেলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, লাইসেন্সের জন্য দামভিত্তিক কোনো নিলাম হবে না, ১০ কোটি টাকা লাইসেন্স ফিতে একটি প্রতিষ্ঠান ১৫ বছরের জন্য এই লাইসেন্স পাবে। আর সেই প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেওয়া হবে আবেদনকারীদের মধ্যে ‘বিউটি কনটেস্ট’ এর মাধ্যমে।
বিউটি কনটেস্ট প্রক্রিয়ায় একটি কমিটি থাকবে, যারা আবেদনকারীদের আর্থিক সামর্থ্য, কারিগরি দক্ষতা, অভিজ্ঞতার মত বিষয়গুলো নির্দিষ্ট মানদণ্ডে যাচাই-বাছাই করে একটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্সের জন্য নির্বাচিত করবে।
এমএনপির সংশোধিত নীতিমালায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর লাইসেন্সের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল বলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান।
আবেদনের শর্ত
# যে কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে এ লাইসেন্সের আবেদন করতে পারবে। এককভাবে কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে না।
# বাংলাদেশি কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে বিদেশি কোম্পানির মালিকানা ৫১ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
# কোনো মোবাইল ফোন অপারেটর বা তাদের পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার বা শরিকরা এ লাইসেন্স আবেদন করতে পারবে না।
# আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের এক বা একাধিক দেশে কমপক্ষে এক কোটি গ্রাহককে তিন বছর এমএনপি সেবা দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
# ২৩ অগাস্টের মধ্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বরাবর এ আবেদন পাঠাতে হবে।
নম্বর পরিবর্তনের ঝক্কিতে যেতে চান না বলে সেবায় সন্তুষ্ট না হওয়ার পরও অনেকে অপারেটর বদলান না। এমএনপি চালু হলে তারা নম্বর ঠিক রেখেই অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
নীতিমালা অনুযায়ী এমএনপি সুবিধা দিতে অপারেটরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩০ টাকা নিতে পারবে। একবার এমএনপি সুবিধা নেওয়ার পর গ্রাহক আবার নতুন কোনো অপারেটরে যেতে চাইলে তাকে ৯০ দিন অপেক্ষা করতে হবে।
বহু প্রতীক্ষিত এই সুযোগ তৈরির জন্য ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রথম দফা এমএনপি নীতিমালা অনুমোদন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। কিন্তু তাতে লাইসেন্স প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে কি না- সেই প্রশ্ন উঠলে নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কয়েকটি মূল্যায়ন মানদণ্ড যুক্ত করে পরের বছর জানুয়ারিতে এমএনপি নীতিমালার সংশোধিত খসড়া চূড়ান্ত করে বিটিআরসি। জুন মাসে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।
এরপর নিলামের উদ্যোগ নিয়ে আবেদনকারী ছয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাঁচটিকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর নিলামের তারিখও ঠিক করা হয়। কিন্তু তার সপ্তাহখানেক আগে নিলাম স্থগিতের ঘোষণা দেয় বিটিআরসি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সে সময় জানান, আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে ‘গোয়েন্দা সংস্থার নিরাপত্তা ছাড়পত্র’ পাওয়ার পরই অপারেটর নিয়োগে নিলাম হবে।
এরপর গতবছর নভেম্বরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ জানান, নিলামের আগে নীতিমালার ‘প্রকিউরমেন্ট প্রসেস’ এ আরও কিছু পরিবর্তন আনা হবে।
আগের নীতিমালায় বলা হয়েছিল, লাইসেন্স দেওয়া হবে নিলামের মাধ্যমে। নিলাম প্রক্রিয়ায় আবেদন ফি এক লাখ টাকা, বিড আর্নেস্ট মানি ১০ লাখ টাকা এবং নিলামের ভিত্তি মূল্য হবে এক কোটি টাকা।
ওই পদ্ধতি পরিবর্তন করে ‘বিউটি কনটেস্ট’ এর মাধ্যমে ‘যোগ্য’ একটি কোম্পানিকে চূড়ান্ত করার নিয়ম যুক্ত করার পর সোমবার লাইসেন্স আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল বিটিআরসি।