যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়বে: ব্লেইক

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রিটেনের বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্কের অবনতি না হয়ে এর ‘উন্নতি’ হবে বলে মনে করছেন ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক।

সৈয়দ নাহাস পাশাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2017, 10:29 PM
Updated : 20 July 2017, 04:46 AM

ব্রিটেনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ‘শুল্কমুক্ত’ ও ‘কোটামুক্ত’ প্রবেশ সুবিধা বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি।

বুধবার লন্ডনে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স (বিবিসিসি) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ব্রিটিশ এই কূটনীতিক।

বাংলাদেশ-ব্রিটেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ব্লেইক বলেন, “দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বাড়ানোর উপায় নিয়ে আগামী দুই বছর কাজ করব। বিষয়টি নিয়ে নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হবে।”

অ্যালিসন ব্লেইক

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোকে বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত করার উপায় ব্রিটিশ মন্ত্রীরা খতিয়ে দেখছেন বলেও জানান তিনি।

বিবিসিসির লন্ডন অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ সভাটি সঞ্চালনা করেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার খন্দকার এম তালহা আলোচনায় অংশ নেন। 

আলোচকরা ঢাকায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ‘গণহারে’ ভিসা প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি নজরে আনলে অ্যালিসন ব্লেইক বলেন, বাংলাদেশে দূতাবাসের ভিসা কার্যক্রম ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

“বিশ্বব্যাপী ভিসার ব্যাপারে কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্যই এটি হোম অফিসের একটি উদ্যোগের অংশ।এখন দিল্লি থেকে পাঁচটি দেশের ব্রিটিশ ভিসা ইস্যু করা হয়।”

ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্য করা হয় না দাবি করে হাই-কমিশনার বলেন, শুধু ব্রিটিশ কর্মকর্তারাই ভিসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন।

ভিসার কাগজপত্র জমা দেওয়ার সময় জাল নথিপত্র ব্যহারের বিষয়টি তুলে ধরে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

ভিসা আবেদনের সঙ্গে জাল কাগজপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সিলেট অঞ্চল শীর্ষে রয়েছে জানিয়ে এটা ঠেকাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে প্রবাসীদের সহায়তা চান ব্লেইক।

আবেদনকারীদের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেওয়া নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি তৈরি হলে ব্রিটিশ হাই কমিশনে যোগাযোগের পরামর্শও দেন তিনি।

গওহর রিজভী বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইন তাদের জন্য ‘বৈষম্যমূলক’ বলে প্রবাসীদের মধ্যে একটি উদ্বেগ কাজ করত। কিন্তু প্রবাসীদের নাগরিকত্ব শুধু সুনিশ্চিতই করা হয়নি, আরও সুদৃঢ় করা হয়েছে।

“বাংলাদেশ এনআরবিদের হারাতে চায় না। তারা এবং তাদের সন্তানেরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবেই থাকবে।”

মসিউর রহমান বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্টের ক্ষেত্রে রেগুলেটরি নিয়মের দিকে নজর রাখার আহ্বান জানান।

এসবের দিকে নজর রেখে বিনিয়োগ করলে তারা পুঁজিবাজারে যেতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের বিভিন্ন অবদানের প্রশংসা করেন।

বিবিসিসির প্রেসিডেন্ট এনাম আলী আগামী অক্টোবর মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় এনআরবি সপ্তাহের আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে সরকারের সহযোগিতা চান।

ওই আয়োজনে অংশ নিতে বিভিন্ন দেশ থেকে যারা ঢাকা যাবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনকে ‘এনআরবি দিবস’ ঘোষণা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ রাখেন এনাম আলী।