এবার শ্রমিক ‘পাওনা শোধ’, ব্যবসা নিয়ে শঙ্কায় বিজিএমইএ

চলতি বছর ঈদুল ফিতরে বিজিএমইএ এর তালিকাভুক্ত সব তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক সংগঠনটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2017, 09:32 AM
Updated : 24 June 2017, 09:40 AM

তবে শনিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারের বিজিএমইএ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তার এ দাবির কিছুক্ষণের মধ্যে এপ্রিল থেকে বেতন-ভাতা না পাওয়ার দাবি এনে রাজধানীর কল্যাণপুর এলাকায় দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিজিএমইএ তালিকভুক্ত মন্ড অ্যাপারেল লিমিটেডের শ্রমিকরা।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর বলেন, “এখন পর্যন্ত যতটুকু খবর আমাদের কাছে আছে, হানড্রেড পারসেন্ট ফ্যাক্টরিতে বেতন-ভাতা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই মাসের অর্ধেক অথবা ২০ দিনের বেতনও দেওয়া হয়েছে।”

বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ আওতাভুক্ত ৩ হাজার ১০০টি কারখানা রয়েছে জানিয়ে সিদ্দিকুর বলেন, “ঈদের আগে বেতন ভাতা নিয়ে সমস্যা হতে পারে এমন কিছু কারখানার তালিকা বিভিন্ন সংস্থা থেকে বিজিএমইএকে দেওয়া হয়েছিল।

“এগুলোর মধ্যে ৩৫টি ফ্যাক্টরিতে ছোট-খাট সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সবার সহযোগিতায় আমরা সেগুলোর সমাধান করতে পেরেছি। আজ পর্যন্ত বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এর আওতায় যত ফ্যাক্টরি আছে, সবগুলোর বেতন-ভাতা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটে নাই।”

তবে চলতি বছর বেতন-ভাতা দিতে তেমন বড় সমস্যা না হলেও পোশাক খাতের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতিতে কারখানা মালিকরা উদ্বিগ্ন বলছেন বিজিএমইএ সভাপতি।

“আমাদের এই সেক্টর বর্তমানে খুবই দুর্দশাগ্রস্ত। ভবিষ্যতে কী হবে এই ভেবে আমরা আতঙ্কিত। গত ১০ বছরে আমাদের অ্যাভারেজ গ্রোথ ছিল ১৩ শতাংশ। সেখানে এই বছর আমাদের ব্যবসার কোনো গ্রোথ নাই, উপরন্তু ‍পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে।”

আগামী বছর পোশাক খাতের পরিস্থিতি কেমন হবে সেই নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সিদ্দিকুর বলেন, “ইউরোপে একটা নীরব মন্দা চলছে; ইংল্যান্ডে ব্রেক্সিট হয়েছে, আমেরিকায় ইলেকশন হয়েছে- পরবর্তীতে আমাদের ব্যবসা আর ঘুরে দাঁড়ায় নি।

“বর্তমান বাজার ধরে রাখাই এখন আমাদের জন্য কষ্টকর। জুলাই, অগাস্ট, সেপ্টেম্বর- সামনের এই তিন মাস কাজ নাই বললেই চলে। আমরা জানি না, আগামী বছর আমাদের কীভাবে যাবে।”

পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারের সহযোগিতা চান বিজিএমইএ সভাপতি।

তিনি বলেন, “উদ্যোক্তাদের সংখ্যা আর কত…, প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক সরাসরি এই সেক্টরে কাজ করে। ইনডেরিক্টলি ফরোয়ার্ড-ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ধরলে এই সেক্টরের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন প্রায় এক কোটি মানুষ।

“এই সেক্টর কারো একার সম্পদ নয়, এটা জাতীয় সম্পদ। এই জাতীয় সম্পদকে রক্ষা করার দায়িত্ব সবার। বিশেষ করে সরকারের সহযোগিতা একান্তভাবে প্রয়োজন। সবাই মিলে যদি কোনোভাবে আর দুই বছর এই সেক্টরকে টিকিয়ে রাখতে পারি, তাহলে সেক্টর আবার ঘুরে দাঁড়াবে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নাছির ও অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।