ঈদ আপ্যায়নের মূল অনুষঙ্গ সেমাই, দুধ, কিসমিস, দারুচিনির দাম নাগালের মধ্যে থাকলেও অস্থিরতা বিরাজ করছে চিনির বাজারে।
এছাড়া শাক-সবজি ও সুগন্ধি চালসহ অধিকাংশ নিত্যপণ্যই স্থিতিশীল রয়েছে বলে বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে।
আমদানি করা করা রসুনের দাম কেজিতে অন্তত ২০ টাকা কমে গিয়ে দেড়শ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববার থেকে টানা তিন দিনের ঈদের ছুটি শুরু। এর দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার থেকেই গ্রামের বাড়িতে ছুটি কাটাতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা।
ঈদের আগে শুক্রবার কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে দেখা যায়।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা মুন্না বলছেন, ঈদ সামনে রেখে পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বেড়েছে। তাই তারাও বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। ঈদের আগে দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন তিনি।
মুরগির মাংসের মতোই চড়া ভাব রয়েছে গরুর মাংসের বাজারে। পুরো রোজার মাস জুড়ে ৪৭০ টাকার নির্ধারিত মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি হলেও এদিন বিক্রেতারা প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দাম ঠিক করেছেন।
মুদি দোকানি মামুন জানান, এবারের ঈদে গতবছরের দামেই শন সেমাই ও লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে। পাউডার দুধ ও প্যাকেটজাত দুধও বিক্রি হচ্ছে অপরিবর্তিত দামে।
খোলা শন সেমাইয়ের কেজি ৬০ টাকা, লাচ্ছা সেমাই একশ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সুগন্ধি চাল প্রতি কেজি ৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চাল একশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে রোজার শুরু থেকে বাড়তি দামে বিক্রি হওয়া চিনির দাম ঈদের আগে এসেও কমেনি। মিলগেইটে ৫৭ টাকায় বিক্রি হওয়া চিনি রমজানের শুরুতে খুঁচরা বাজারে ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
চিনির বাজারে অস্থিরতার বিষয়টি ব্যবসায়ীদের সব মহল স্বীকার করলেও দায় নিচ্ছেন না কেউই, দুষছেন একে অন্যকে।
চিনি বিপণনের অন্যতম কোম্পানি সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মিল গেইটে চিনির দাম প্রতি কেজি ৫৭ টাকা। খুচরা বাজারে ৭০ টাকা বিক্রি হলে সেটা অন্যায় হবে।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের পারস্পরিক দোষারোপের ‘পুরোনা’ কৌশলে মাঝখান থেকে নিজেরা লাভ ভাগিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন।
এ অবস্থার পরিবর্তনে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।
এদিকে ঢাকার মিরপুর-২ নম্বর কাঁচাবাজার ও কারওয়ানবাজার কিচেন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, বিগত কয়েক সপ্তাহের মতো অপরিবর্তিত দামেই শসা, করলা, টমেটোসহ সবজি বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে পটল প্রতি কেজি ২০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ২৫/৩০ টাকা এবং পেঁপে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুরের সবজি বিক্রেতা ইকরাম বলেন, ঈদের ঝামেলার কারণে মাছ সবজির ট্রাক আসা কমে গেছে। সেকারণে দাম একটু চড়া।
কারওয়ান বাজারে রুপচাঁদা মাছ প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, রুই মাছ ২৮০ টাকা, কাতল মাছ ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ১৬০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের জোড়া (প্রতিটি ৬শ থেকে ৭শ গ্রাম) ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায়।
একই ধরনের দাম পাওয়া গেছে মিরপুরের বাজারেও। সেখানে প্রবীর সাহা নামের একজন ক্রেতা জানান, রুই ও কাতল মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি মনে হচ্ছে।