বিমান নিয়ে সংসদে মন্ত্রীর হতাশা

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় সংসদে হতাশা প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2017, 11:26 AM
Updated : 21 June 2017, 01:19 PM

বুধবার সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় তিনি বলেছেন, “বিমান সম্পর্কে যত কম কথা বলা যায় ততই ভালো।”

মন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এ সংস্থাকে লিমিডেট কোম্পানি করা হলেও জবাবদিহিতা বা প্রয়োজনীয় জনবল কোনটিই সেখানে নেই।

“এ কারণে বিমান নিয়ে অজস্র অভিযোগ এখানে (সংসদে) আসছে।”

২০০৭ সালে কোম্পানি হওয়ার পর ২০০৭-০৮ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বিমান লাভের মুখ দেখে।

২০০৭-০৮ অর্থবছরে পাঁচ কোটি ১৯ লাখ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা লাভ হলেও এরপর টানা পাঁচ অর্থবছরে বিমানের লোকসান হয় এক হাজার ৪৩৫ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা।

দীর্ঘদিন পর বিমান আবার লাভের মুখ দেখে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে। ওই বছর ২৭২ কোটি ২৩ লাখ টাকা লাভ হয়।  

ফাইল ছবি

মেনন বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা যেটা করেছি, তা হচ্ছে, বিমানের সেবাকে জরুরি সার্ভিস ঘোষণা করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে, যারা বিমানের আমূল সংস্কারের জন্য সুপারিশ দেবে। ওই সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। পরে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

“তবে ইতোমধ্যে বেশ কিছু উন্নতি বিধান করার চেষ্টা হয়েছে। বহরে নতুন নতুন বিমান যুক্ত করা হয়েছে, যদিও এ ক্ষেত্রে অনেক ধরনের অভিযোগ রয়েছে।”

২০১৮ ও ২০১৯ সালে বিমান বহরে যুক্ত হচ্ছে চারটি বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাড়াতে কানাডার বোম্বারডিয়ারের তিনটি নতুন ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ কেনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

বর্তমানে বিমান বহরে নিজস্ব চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ রয়েছে। সেই সঙ্গে লিজে রয়েছে দুটি করে বোয়িং ৭৭৭-২০০, ৭৩৭-৮০০ এবং ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০।

প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মেনন বলেন, “দুর্নীতি ও কালো টাকার দৌরাত্ম্য এখন ব্যাপক। আমাদের দেশে কলো টাকার পরিমাণ জিডিপির ৩৫ থেকে ৮০ শতাংশ। এর জন্য কোনো কর দিতে হয় না। এই কালো টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যায়। এই পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ এক বছরের বাজেটের সমান। সেই টাকা ফেরত আনা যাবে না। অথচ বাজেটের টাকার সঙ্কুলানের জন্য ভ্যাট-ট্যাক্সের মহোৎসব চলবে; এটা কী করে হয় তা জানতে চাই।”

মেনন বলেন, “১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর হলে তার পরিণতি কী ​হবে অর্থমন্ত্রী তা জানেন না। এতে নিম্ন মধ্যবিত্তদের ওপর আঘাত আসবে।”

১৫ শতাংশ ভ্যাটের বিষয়টি অর্থমন্ত্রী বিবেচনা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন মেনন। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ব্যাংক হিসাবের ওপর বাড়তি আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মেনন বলেন, “এই শুল্কের নাম বদলালে তা যথেষ্ট হবে না।”