মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন লিমিটেড নামে ওই কোম্পানিটির অংশীদারদের হাতে ‘প্রাক যোগ্যতা সনদ’ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ।
ঢাকা-সিরাজগঞ্জ মহাসড়কের পাশে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে সিরাজগঞ্জ সদর ও বেলকুচি উপজেলায় এক হাজার ৪১ একর জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চল।
২৯৮ কোটি টাকায় বেজার কাছ থেকে এই জমি নিচ্ছে ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি নিট এশিয়া গ্রুপ, রাইজিং গ্রুপ, ইসকয়ার গ্রুপ, এসএম গ্রুপ (আরকে সিরামিক), টেক্সটাউন গ্রুপ, রাতুল গ্রুপ, মানামি ফ্যাশন লিমিটেড, প্যারাগন গ্রুপ, মাহমুদ গ্রুপ ও চেইঞ্জ বাংলাদেশ লিমিটেড। এছাড়া মো. কামরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তিও রয়েছেন এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের অংশীদার হিসেবে।
বেজার পক্ষ থেকে জানানো হয়, সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এছাড়া পানি শোধনাগার প্ল্যান্ট, বর্জ্য পরিশোধনাগার প্ল্যান্ট ও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থাসহ পরিবেশ বান্ধব সব ব্যবস্থা থাকবে সেখানে।
এখানে প্রস্তাবিত শিল্পখাতের মধ্যে টেক্সটাইল ও নিটওয়্যার, অ্যাগ্রোবেইজড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, ফার্মাসিউটিক্যাল, অটোমোবাইল, এলএনজি, চামড়াজাত পণ্য, স্টিল, ইলেকট্রনিকস, তথ্যপ্রযুক্তি, আসবাব, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং রপ্তানিমুখী শিল্পখাত রয়েছে।
বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রথম বছরে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০ হাজার দক্ষ-অদক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে বেজা আশা করছে। পরের ১০ বছরের মধ্যে তা বেড়ে পাঁচ লাখের বেশি হবে।
ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাদের হাতে সনদ তুলে দেওয়ার পর আবুল কালাম আজাদ বলেন, সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন লিমিটেডের উদ্যোক্তারা তাদের আগের ব্যবসার সুনাম অক্ষুন্ন রেখে সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন সফলভাবে বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।
ভূমি সচিব মুজিবুর রহমান হাওলাদার, বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য এম এমদাদুল হক, মো. হারুনুর রশিদ ও মোহাম্মদ আইয়ুব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পবন চৌধুরী বলেন, সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল বেসরকারি খাতে সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বারে অবস্থিত হওয়ায় সহজে বিনেয়োগ আকর্ষণ করবে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল।
সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন লিমিটেডের পক্ষে বক্তব্য দেন রাইজিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান বাবু।
তিনি বলেন, “সরকার অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বর্তমানে অনেক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু সরকারের নীতি কয়েক বছর পর পর পরিবর্তন হয়। অর্থনৈতিক অঞ্চলের ক্ষেত্রে যেন এমনটি না হয়, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সেই দাবি থাকবে।”
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত করা, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় এবং ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
ইতোমধ্যে ১৪টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ‘প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স’ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল, আব্দুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, আমান অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বে-অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া মংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ডেভলপার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে এবং মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের (প্রথম পর্যায়) ডেভলপার নিয়োগের জন্য নির্বাচিত ডেভলপারকে ‘লেটার অব অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছে বেজা।