গয়নার বাজারে আগ্রহ ঝুমকা, ব্রোচ, নাকফুলে

ঈদে নতুন পোশাক আর জুতোর সঙ্গে মিলিয়ে সাজসজ্জার অন্য উপকরণও চাই; ঢাকার বিপণিবিতানগুলোতে তাই গয়নার দোকানে ভিড় জমেছে নানা বয়সী নারীদের।

কাজী নাফিয়া রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 June 2017, 05:06 AM
Updated : 20 June 2017, 05:10 AM

রাজধানীর গুলশান, বনানী, গাউসিয়া, চাঁদনি চক, ইস্টার্ণ মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি আর দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো ঘুরে সোমবার দেখা গেল বিকিকিনির জমজমাট চিত্র।  

বিক্রেতারা জানালেন, জুয়েলারি সামগ্রীর মধ্যে গলার চিক, নেকলেস, মালা, পাথরের লকেটসহ চেইন, কানের দুল, আংটি, ব্রেসলেট, চুড়ি, নোজ পিন ও ব্রোচেই মেয়েদের আগ্রহ বেশি।

এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ণ মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের ‘বাসিকা কসমেটিকস অ্যান্ড জুয়েলারির ব্যবস্থাপক সুমন হোসেন জানান, তার দোকানে ডায়মন্ড কাটের কানের দুল আর আংটির চাহিদাই বেশি। পাশাপাশি বিভিন্ন রংয়ের পাথরের জুয়েলারিও ক্রেতারা কিনছেন পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে।

“পাথরের চিকগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। কানের দুল আর আংটিতো আছেই। ড্রেসের সাথে মিলিয়ে অনেকেই কিনছেন। কানের দুলের মধ্যে ঝুমকা এবার বেশি যাচ্ছে।”

সুমন জানালেন, ডায়মন্ড কাটের চুড়ির দাম বেশি হওয়ায় পাথরের চুড়ির চাহিদাই বেশি। অনেকে ব্রোচও খুঁজছেন।

এ বিপণিবিতানের মাস্টার গহনার ব্যবস্থাপক শাহিনুর ইসলাম জানান, গোল্ড প্লেটেড গলার ও কানের সেটগুলোর চাহিদা এখন তেমন নেই।

“আমাদের মেটালের সাথে পাথরের জুয়েলারিগুলো মূলত বিয়ের অনুষ্ঠানে বেশি পরা হয়। সে কারণেই এখন তেমন চাহিদা নেই।”

গাউসিয়া, চাঁদনি চক আর নিউ মার্কেটের বিভিন্ন গয়নার দোকানে ঘুরে জানা গেল, ঝুমকা, গলার নেকলেস, লকেটসহ চেইন, আংটি আর ঘড়ি নিয়ে তরুণীদের আগ্রহ বেশি। তবে পাথরের বিভিন্ন ডিজাইনের ‘ব্রোচ’ নিয়ে সব বয়সী নারীদেরই আগ্রহ রয়েছে।

গাউসিয়ার চিশতিয়া মার্কেটের জুয়েলারি শপ ফরেন মার্টে’ ব্রোচ দেখছিলেন তাহমিনা চৌধুরী।

তিনি বলেন, “হিজাব, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ সবকিছুর সাথেই পরা যায়। আর হিজাবের সাথে পরার জন্য চেইনের ব্রোচটা এখন চলছে, তাই কিনতে এসেছি।”

এ দোকানের কর্ণধার মাহমুদ হোসেন জানান, ব্রোচের পর এন্টিক ঝুমকা-টপ, আংটি আর নেকলেস বেশি চাইছেন ক্রেতারা। তবে কম বয়সী অনেকে ব্রেসলেটও নিচ্ছে।

পাথরের ব্রোচগুলো তিনি বিক্রি করছেন ১২০ থেকে ৫০০ টাকায়। এন্টিক নেকলেস ও কানের দুলের সেট বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে হাজার টাকায়। পাথর ও এন্টিক ঝুমকা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যে। আর এন্টিক আংটি পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ২৫০ টাকায়।

গাউসিয়া আর চাঁদনি চকের ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের সংগ্রহেও এন্টিকের আংটি দেখা গেল। শাহজাহান নামের এক বিক্রেতা জানালেন, তার আংটির বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।

বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের গয়নার দোকানগুলোতে মেয়েদের ঝুমকা, টপ, ব্রোচ, চুড়ি আর ঘড়ির বিক্রি বেশি বলে বিক্রেতারা জানালেন।

‘দুল’ এর বিক্রয়কর্মী ডালিম জানান, ক্রেতারা তাদের কাছে পাথরের লকেটের চেইন আর ঘড়িই বেশি চাইছেন।

বাহারী রংয়ের মালা, কানের দুল, আংটি আর পয়েলের সমাহার দেখা গেল দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোতে।

বসুন্ধরা সিটিতে ফ্যাশন হাউজ সৃষ্টির শপ ইনচার্জ তামান্না জাহান বীথি বলেন, “আমাদের শো-রুমে মেয়েদের পায়েল, ঝুমকা আর আংটির চাহিদা বেশি। কালারফুল ফ্যাশনেবল অর্নামেন্টসগুলো তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে।”

‘দেশী দশ’ এর আরেক ফ্যাশন হাউজ ‘রঙ বাংলাদেশ’ এর ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম হীরা জানালেন, তাদের মেটালের ঝুমকা, আংটি, মালা, পয়েল আর চুলের কাটার প্রতিই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।

বিভিন্ন ডিজাইনের মালা ২৮০ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা, পায়েল ৬০ থেকে ২৫০ টাকা, চুলের কাটা ১২০ থেকে ৩৫০ টাকা এবং আর ব্রেসলেট ৬০ থেকে ৮৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এ দোকানে।

ফারিহা রহমান নামের একজন ক্রেতা গয়না দেখতে দেখতে জানালেন, আংটি কেনার কথা ভাবছেন তিনি।

বসুন্ধরায় আড়ংয়ের আউটলেটে রুপা আর মুক্তার গয়নার পাশাপাশি নোজ পিনের চাহিদা বেশি বলে জানালেন সুপারভাইজার ফারজানা আক্তার।

তিনি বলেন, এন্টিকের কানের দুল, মুক্তার মালাও চাইছেন ক্রেতারা। অনেকে গিফট হিসেবে কিনছেন।

ফারজানা জানান, তারা রুপার আংটি বিক্রি করছেন ৩৫০ থেকে তিন হাজার টাকায়, সোনার নোজ পিনের দাম ৩৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকা, আর পার্লের মালা ৭০০ থেকে ১২ হাজার টাকা।