নাগড়া-পাম সুর সঙ্গে পেনসিল হিলেরও চাহিদা

ঈদের সাজে পোশাকের রঙ আর নকশার সঙ্গে মিল রেখে চাই জুতাও, তাই রোজার শেষভাবে এসে স্টাইলিশ ও আরামদায়ক জুতার খোঁজে এর দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের।

কাজী নাফিয়া রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2017, 06:17 PM
Updated : 18 June 2017, 06:19 PM

রাজধানীর অভিজাত বিপণিবিতান বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, এলিফ্যান্ট রোড, ধানমন্ডি ও নিউ মার্কেট এলাকার বিপণিবিতানগুলো ঘুরে জমজমাট জুতা বেচা-কেনা দেখা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, এবার ছেলেদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে নাগড়া ও স্লিপার। অন্যদিকে মেয়েদের আগ্রহ বেশি পাম সু, স্লিপার ও পেনসিল হিলে।

রোববার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা  যায়।

জুতার ব্র্যান্ড ‘এপেক্স'র ব্যবস্থাপক কামরুজ্জামান জানান, তাদের শো-রুমে ছেলেদের স্লিপার ও বেল্টের জুতাগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। স্লিপারগুলো ১৬৯০ থেকে ৩৮৯০ টাকা আর বেল্টের জুতা ১৬৯০ থেকে ৪৯৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মেয়েদের স্লিপারের সঙ্গে বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা ও পেনসিল হিলই পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। স্লিপারগুলো ৫৯০ থেকে ৭৯০ টাকায় এবং পেনসিল হিল ২২৯০ থেকে ৩৯৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কামরুজ্জামান বলেন, “ঈদের পোশাকের সাথে মানিয়েই সবাই জুতা কিনতে চায়। সে অনুযায়ীই আমরা এবার জুতা সাজিয়েছি। ক্রেতারা সফট ও ফ্যাশনেবল জুতাগুলোই বেশি নিচ্ছে।"

এদিকে জুতার আরেক ব্র্যান্ড ‘বে ইম্পেরিয়াম’র ব্যবস্থাপক রিপন জানান, গরম ও বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে তারা এবার বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা এনেছেন।

“ছেলেরা বেশি কিনছে কালারফুল ফ্যাশনেবল নাগড়াগুলো, ১৭৯০ থেকে ২০৯০ টাকায় এগুলো বিক্রি করছি। আর মেয়েদের স্টোনের উপর কাজ করা বেল্টের জুতাগুলোই বেশি বিক্রি হচ্ছে, দাম পড়ছে ১৫৯০ থেকে ১৯৯০ টাকা।

“তবে আমাদের এবারের ঈদের মূল আকর্ষণ ব্যালেরিনা পাম সু।”

বাদামি, হলুদ ও ছাই রংয়ের পাম সুগুলো ৯৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বসুন্ধরায় জুতার আরেক ব্র্যান্ড 'বাটা’য়ও পাম সু ও ইনসোলিয়া সুতে মেয়েদের আগ্রহ বেশি বলে জানিয়েছেন সেখানকার বিক্রয়কর্মী নাজনীন রহমান আঁখি।

তিনি বলেন, লোকাল পাম সুগুলো বিক্রি হচ্ছে ৫৯০ থেকে ২৩৯০ টাকায়। আর লেদারেরগুলো বিক্রি হচ্ছে ৪৫০০ থেকে ৫০০০ টাকায়। ইনসোলিয়ার দাম পড়ছে ২৫৯০ থেকে ২৯৯০ টাকা।

অন্যদিকে ছেলেদের স্লিপারও বেশ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বাটার আরেক বিক্রয়কর্মী আব্দুল হাই অলি। তাদের স্লিপারের দাম পড়ছে ৯৯০ থেকে ১৭৯০ টাকা।

বসুন্ধরায় জুতা কিনতে আসা রাজাবাজারের দিলরুবা হাসান বলেন, “সব সময় পরার জন্য পাম সুগুলো বেশ আরামদায়ক। আর দেখতেও সুন্দর, তাই ঈদে পাম সুই কিনলাম।"

বসুন্ধরা সিটিতে ‘আড়ং’য়ের বিক্রয়কর্মী নুসরাত জানান, মেয়েদের নাগড়া ও স্লিপারের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। নাগড়াগুলোর দাম ১০০০ থেকে ১৭০০ টাকার মধ্যে। আর স্লিপারগুলো বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকায়।

এই বিপণিবিতানের আরেক বিক্রয়কর্মী ফয়সাল জানান, ছেলে শিশুদের চাহিদা বেশি লোফারে, যেগুলো বিক্রি হচ্ছে ৭৮৩ টাকায়। আর মেয়ে শিশুদের আগ্রহ বেশি পাম সুতে; গোল্ডেন, সিলভার ও কালো- তিন রংয়ের পাম সু বিক্রি হচ্ছে ৫২৮ টাকায়।

আড়ংয়ের আরেক বিক্রয়কর্মী আফিয়া আয়েশা বলেন, ছেলেদের লোফার, নাগড়া আর সাইকেল সুর প্রতি আগ্রহ বেশি।

“লোফার বিক্রি করছি ২০৬৭ টাকায়, নাগড়া ১৮৮৯ টাকায়, সাইকেল সু বিক্রি হচ্ছে ১৪৫৬ টাকায়।"

পাঞ্জাবি-পায়জামার সাথে পরার জন্য নাগড়ার পাশাপাশি স্লিপারেরও চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এই শো-রুমে জুতা কিনতে আসা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফ উদ্দীন বলেন, “ঈদে পাঞ্জাবি পড়ব, সে কারণেই নাগড়া কিনেছি। আর এবার তো নাগড়া চলছে বেশি, দেখতেও ফ্যাশনেবল, তাই কিনলাম।"

এদিকে এলিফ্যান্ট রোড ও ধানমন্ডির বিভিন্ন বিপণিবিতানে পাম সু ও স্লিপারের চাহিদা বেশি দেখা গেছে।

এলিফ্যান্ট রোডের ডার্লিং পয়েন্ট সুপার মার্কেটের জুতার দোকান ‘জেরিন বাজার'র বিক্রয়কর্মী ইকবাল হায়দার বলেন, “মেয়েদের পাম সুর পাশাপাশি দোপ্রা হিল, কাস্টার্ডিং হিলের চাহিদাও রয়েছে। আর ছেলেদের লোফার আর স্লিপার বেশি বিক্রি হচ্ছে।"

ধানমন্ডির রাপা প্লাজার ‘ক্রিসেন্ট ফুটওয়্যারের’ ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আরিফও পাম সু, স্লিপার ও লোফার বেশি বিক্রি হওয়ার কথা জানান।

তবে অপেক্ষাকৃত কম টাকায় জুতা কিনতে পারায় নিউ মার্কেট এলাকায় ক্রেতাদের ভিড় বেশি দেখা যায়।

বকশীবাজার এলাকা থেকে এই মার্কেটে জুতা কিনতে আসা তাসনুভা আক্তার বলেন, “কয়েকটি ড্রেসের সাথে মিলিয়ে তিনটি জুতা কিনেছি। দাম কম হওয়ায় কিনতে পারলাম।”