বাণিজ্য ঘাটতি কত, সংসদের তথ্যে গরমিল

চলতি অর্থ বছরে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে উপস্থাপিত তথ্যে গরমিল ধরা পড়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2017, 08:32 AM
Updated : 5 June 2017, 11:49 AM

সোমবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ পিনু খান ও এম আবদুল লতিফের দুটি প্রশ্নের জবাবে যে তথ্য তিনি তুলে ধরেন তাতে অসঙ্গতি দেখা যায়।

পিনু খানের প্রশ্নের বাণিজ্যমন্ত্রী  জানান, চলতি অর্থ বছরে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৬৮৮ কোটি ১৪ লাখ (৬৮৮১.৪৭ মিলিয়ন)।

কিন্তু এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে চলতি অর্থবছরে দেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ৬৬২ কোটি ৬০ লাখ (৬৬২৫.৯৮ মিলিয়ন) বলে তোফায়েল আহমেদ জানান।

অর্থবছর এখনো শেষ না হলেও পুরো অর্থবছরের হিসেবে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। উপরন্তু তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট বাণিজ্য ঘাটতির চেয়ে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে হালনাগাদ পরিসংখ্যানে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) তথ্য দেওয়া হয়েছে।

তাতে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭০৩ কোটি ৮০ লাখ, যা আগের অর্থবছরে একই সময়ে চেয়ে ৩২ শতাংশ বেশি।

সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৮টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৯৫টি দেশের সাথে আমদানি রপ্তানি হয়েছে। এই ১৯৫টি দেশের মধ্যে ৭১টি দেশের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।

তোফায়েল বলেন, চলতি অর্থ বছরের চীনে ৭৩৬ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন ডলার রপ্তানির বিপরীতে আমদানি হয়েছে সাত হাজার ৬১৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। চীনের পরেই ভারতের সাথে বাংলাদেশের বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। ভারতের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি তিন হাজার ৯৯৮ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলার। ভারতের সাথে ৫২২ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ডলার আমদানির বিপরীতে আমদানি হয়েছে চার হাজার ৫২১ মিলিয়ন ডলার।

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ জানান, দেশে লাইসেন্সধারী কোন মাল্টি লেভেল কোম্পানি  (এমএলএম) নেই। আইনভঙ্গ করে অবৈধভাবে কেউ এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আমিনা বেগমের প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল জানান, গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে দেশে মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ বস্ত্র খাত হতে অর্জিত হয়েছে।

এদিকে গোলাম রাব্বানীর এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় দেশে বর্তমানে চালের মজুদ কিছুটা কম রয়েছে। হাওরাঞ্চলের বন্যায় ফসলহানির ঘাটতি পূরণ ও মজুদ সন্তোষজনক রাখতে সরকার বিদেশ থেকে ছয় লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে তিন লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।